ড্যাফোডিলের সংবাদ সম্মেলনে

পরিকল্পিত হামলার শিকার ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা, জিম্মির অভিযোগ

সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলন © ভিডিও থেকে সংগৃহীত

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ওপর পরিকল্পিত ও সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে সিটি ইউনিভার্সিটির একদল শিক্ষার্থী বলে অভিযোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। অভিযোগ উঠেছে—হামলাকারীরা শুধু শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণই চালায়নি, বরং তাদের হোস্টেল ব্যাচেলর্স প্যারাডাইস-এ প্রবেশ করে সংগবদ্ধভাবে ভাঙচুর ও নির্যাতন চালায়।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকার আশুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আমিনুল ইসলাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করা হয়। 

অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, গত ২৬ অক্টোবর ঘটনাটির সূত্রপাত হয় সন্ধ্যায় সিটি ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর দ্বারা ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর গায়ে থুথু নিক্ষেপকে কেন্দ্র করে। এরপর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং রাতেই ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের ওপর পরিকল্পিত হামলা হয়।

ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের সহপাঠীদের উদ্ধারে গেলে সিটি ইউনিভার্সিটির ভেতরে ঢুকে পড়েন, তখনই সংঘর্ষ বাধে। বিকাল তিনটা পর্যন্ত সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনের নির্দেশে একাধিক শিক্ষার্থীকে জিম্মি করে রাখা হয়। অভিযোগ আছে, ‘ক্ষতিপূরণ’-এর নামে তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ দাবি করা হয়, এমনকি জীবননাশের হুমকি দিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায় ও ভিডিও করে তা কিছু গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আহত ও সংকটাপন্ন শিক্ষার্থীদের চিকিৎসায় বিলম্ব ঘটানো হয়েছে—যা ভুক্তভোগীরা ‘জীবননাশের চেষ্টার শামিল’ বলে উল্লেখ করেছেন। তাদের দাবি, এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত; উদ্দেশ্য ছিল আর্থিক ক্ষতির দায় নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এবং প্রকৃত দোষীদের আড়াল করা।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক শিক্ষার্থীদের মুক্ত করে এবং হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। তবে ইউজিসির নথিতে কোথাও অস্ত্রের উল্লেখ না থাকায়, শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছে—মিডিয়ায় অস্ত্রের কথা বললেও, সিটি ইউনিভার্সিটি প্রশাসন তা প্রমাণ করতে পারেনি।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, পুরো ঘটনাটি ছিল পরিকল্পিত মিডিয়া ট্রায়াল—যেখানে জিম্মি শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করে সংবাদ প্রচার করা হয়, যাতে প্রকৃত ঘটনা আড়াল করা যায়। তারা দাবি করেছেন, এটি ছিল “মিডিয়া ম্যানিপুলেশন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক জঘন্য উদাহরণ।”

শিক্ষার্থীরা আরও জানান, জিম্মি অবস্থায় তাদের ওপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়; কেউ কেউ গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। দেড়শতাধিক শিক্ষার্থীর মধ্যে অনেকের মাথায়, চোখে ও শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি দাবি জানিয়েছেন—ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। সেই সঙ্গে, মিডিয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারকারীদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।