মাইলস্টোন দুর্ঘটনা: ৯৭ দিনে ৩৬ অস্ত্রোপচারের পর বাসায় ফিরলো দীপ্ত

নাভিদ নাওয়াজ দীপ্ত
নাভিদ নাওয়াজ দীপ্ত © সংগৃহীত

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ৯৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নাভিদ নাওয়াজ দীপ্ত। এ সময় তার শরীরে ৩৬ বার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। স্কিন গ্রাফটিং (শরীরের একটি অংশ থেকে ত্বক কেটে নিয়ে অন্য ক্ষতিগ্রস্ত অংশে প্রতিস্থাপন) করা হয়েছে আটবার। তার শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।

সোমবার (২৮ অক্টোবর) নাভিদকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এ সময় জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইনস্টিটিউটের যুগ্ম পরিচালক ডা. মারুফুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। 

তিনি বলেন, ‘গত ২১ জুলাই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় নাভিদের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে যায়। পরদিন সিএমএইচ থেকে তাকে বার্ন ইনস্টিটিউটে আনা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরিবারকে দু’বার দুঃসংবাদের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসক দল হাল ছাড়েনি।’

ডা. মারুফুল ইসলাম বলেন, ‘নাভিদ মোট ২২ দিন আইসিইউতে ছিল, যার মধ্যে ১০ দিন তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখতে হয়। এরপর ৩৫ দিন হাইডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) এবং পরবর্তী ৪০ দিন কেবিনে থেকে চিকিৎসা শেষে সোমবার বাড়ি ফিরে যায়।নাভিদের মোট ৩৬ বার ছোট-বড় অপারেশন হয়েছে, এর মধ্যে ৮ বার শরীরের ক্ষতস্থানে চামড়া প্রতিস্থাপন করা হয়। এই ঘটনার অন্য কোনো দগ্ধ রোগীর এতবার সার্জারি লাগেনি,” যোগ করেন তিনি।

বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর নাভিদের ফুসফুসে পানি জমে গিয়েছিল। এজন্য তাকে লাইফ সাপোর্টে উপুড় করে শুইয়ে চিকিৎসা দিতে হয়, যা ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।’ তিনি আরও জানান, ওই দুর্ঘটনায় দগ্ধ আরও পাঁচ শিক্ষার্থী এখনো বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুর ১টা ১৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর উত্তরা মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান আছড়ে পড়ে। ওই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৫ জন নিহত হন এবং প্রায় ১৫০ জন আহত হন, যাদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী ছিলেন।