প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগ ঢাবি শিক্ষার্থীর

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় © ফাইল ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সহকারী প্রক্টরের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন চেক করে গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে, যার মধ্যে দুইজন ছাত্র প্রতিনিধি রয়েছেন।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের শিক্ষার্থী আবির হাসান এই লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

আবিরের অভিযোগ, ‘একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রক্টর অফিসে ডেকে নিয়ে দুইজন প্রক্টর শিক্ষক আধাঘণ্টা ধরে আমার ব্যক্তিগত ফোন ঘেঁটেছেন। তারা আমার রাজনৈতিক পরিচয় জানার চেষ্টা করেছেন, যা একজন শিক্ষার্থীর মৌলিক গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে সঠিক বিচার না পাই, তবে আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব। প্রয়োজনে হাইকোর্টে যাব। আমি এখানকার নিয়মিত শিক্ষার্থী, আমাকে কেন এমনভাবে আচরণ করা হলো যেন আমি কোনো অপরাধী? এমনকি পুলিশও কারও ফোন চেক করতে চাইলে আইনি প্রক্রিয়া ও ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিতে হয়।’

আবির জানান, তিনি পূর্বে ডাকসু নির্বাচনে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রায় তিন হাজার ভোট পেয়েছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ছিলেন। তার ভাষায়, ‘একজন সহকারী প্রক্টর আমার কক্ষে ঢুকে বললেন, “তোমাকে তো চিনি, তোমার রাজনৈতিক পরিচয় কী? ফোনটা দাও দেখি।” এতে পরিষ্কার বোঝা যায়, তিনি আমার রাজনৈতিক পরিচয় জানার চেষ্টা করছিলেন।’

তিনি আরও জানান, শাহবাগ প্রবেশপথে নিয়মিত তল্লাশির সময় প্রক্টরিয়াল টিমের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। পরে তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে গিয়ে ফোন পরীক্ষা করা হয়।

এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টা ৪০ মিনিটে শাহবাগ চেকপোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রক্টরিয়াল মোবাইল সিকিউরিটি টিমের মধ্যে এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে এক শিক্ষার্থীকে প্রক্টর অফিসে এনে জবানবন্দি নেওয়া হয়। ওই শিক্ষার্থী লিখিতভাবে অভিযোগ করেন যে, তার ব্যক্তিগত ফোন দুইজন সহকারী প্রক্টর পরীক্ষা করেছেন।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে। সদস্য হিসেবে রয়েছেন সহকারী প্রক্টর ড. এ কে এম নূর আলম সিদ্দিকী, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সাকিবুর রহমান রনি এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নূমান আহমেদ চৌধুরী।

তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ জানিয়েছেন, “তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”