ভাইরাল শব্দটা ভেরিফিকেশনকে মেরে ফেলেছে— সাংবাদিকতা নিয়ে খালেদ মহিউদ্দিন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর. সি. মজুমদার মিলনায়তনে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর. সি. মজুমদার মিলনায়তনে © টিডিসি

সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিন বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পুরো পৃথিবীকে একটি বিশাল ‘আনফিল্টারড নিউজরুমে’ পরিণত করেছে। এর ফলে আমরা এত দ্রুত তথ্য প্রকাশ করতে চাই, এত দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাই যে চিন্তা করার সময়ই পাই না— সত্যি সেটা সত্য ঘটনা কিনা। এখন ‘ভাইরাল’ শব্দটা ‘ভেরিফিকেশন’ শব্দটাকে মেরে ফেলেছে। এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, আমরা এমন এক সময় পার করছি যেখানে সম্পাদনার জায়গা নিয়ে নিয়েছে অ্যালগরিদম।

রবিবার (২৭ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর. সি. মজুমদার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ আয়োজিত ‘যা সম্পাদিত না, তা সংবাদ নয়’ শীর্ষক আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, বিচারপতি শাহাবুদ্দিনের সময় এমন অনেককে জানি, যাদের অবজারভার পত্রিকাই পড়তে হতো। সেই পত্রিকাই পড়ে তারা সিদ্ধান্ত নিতেন; কোনো তুলনা করতেন না। তিনি পরিচালিত হতেন ওই পত্রিকা দিয়ে। ফলে তাঁর জীবনে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বর্তমানে সেই বিষয়টি আর নেই। আমাদের বুঝতে হবে, সাংবাদিকতা ধীরে ধীরে মারা যাচ্ছে।

আলোচনায় খালেদ মহিউদ্দিন বলেন, সংবাদ হতে হলে তা অবশ্যই সম্পাদনার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবে শুধু সম্পাদিত হলেই তা সংবাদ হয় না।

তিনি আরও বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগকে আমি মানবসভ্যতার চাকা আবিষ্কারের যুগের সঙ্গে তুলনা করি। এই সময়ে সাংবাদিকরা ভোক্তাদের কী দিচ্ছেন— তা যদি পুনর্মূল্যায়ন না করেন এবং সংজ্ঞাকে নতুনভাবে নির্ধারণ না করেন, তাহলে শিগগিরই সাংবাদিকতা গুরুত্ব হারাবে।

খালেদ মহিউদ্দিন বলেন, পৃথিবীতে একটা ক্লাসিক বিতর্ক আছে— পূর্ণাঙ্গ সাংবাদিক কে: রিপোর্টার নাকি সম্পাদক? টেলিভিশন সাংবাদিকতার যুগে আমরা রিপোর্টার ও এডিটরদের সেই ক্লাসিক্যাল ফাইটটা আর খুব একটা দেখি না, তবে অনেক জায়গায় তা এখনও চলছে। দিনশেষে পূর্ণাঙ্গ সাংবাদিক রিপোর্টাররাই, কারণ রিপোর্টাররা সংবাদ সংগ্রহ করেন— যা সম্পাদকরা করেন না। রিপোর্টাররা সংবাদ সংগ্রহ না করলে কোনো খবরই সামনে আসত না।