সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার করাসহ বিডিপিএর ১৭ প্রস্তাব

সচিবালয়ে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা
সচিবালয়ে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা © সংগৃহীত

সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা ও ১২টি গ্রেড করাসহ ১৭ দফা প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিডিপিএ)। জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫ এর সভাপতির কাছে এ দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। এসব প্রস্তাবের আলোকে উন্নত বা উন্নয়নশীল দেশ সমূহের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি বিকল্প বেতন ব্যবস্থা প্রবর্তনের আহবান জানিয়েছেন তারা।

সংগঠনের সভাপতি গাজী সাইফুল ইসলাম ও মহাসচিব মো. জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত আবেদনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য বিভাগসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, সরকারি, বেসরকারি, স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বাংলাদেশ ফার্মেসী কাউন্সিল কর্তৃক ‘বি’ ক্যাটাগরিতে নিবন্ধিত ফার্মাসিস্টদের প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট এসোসিয়েশন (বিডিপিএ) কেন্দ্রিয় কমিটি। 

জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫ গঠন হওয়ায় সংগঠনের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বলা হয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুচিন্তিত মতামতের ভিত্তিতে বেতন কমিশন সরকারের কাছে একটি বৈষম্যহীন ন্যায়সঙ্গত ও কার্যকরী বেতন কাঠামোর সুপারিশ প্রণয়ন করতে সক্ষম হবে।

বিডিপিএর প্রস্তাবগুলো হলো, বেতন গ্রেড ২০ থেকে কমিয়ে ১২টি করা; ১:৪ অনুপাতে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল ৩৫ হাজার এবং সর্বোচ্চ ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা করে জাতীয় বেতন স্কেল ২০২৫, ১ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করা। এ ক্ষেত্রে কমিশন প্রয়োজন মনে করলে সর্বোচ্চ বেতন স্কেল ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার বেশিও করতে পারে। তবে সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ বেতন স্কেলের অনুপাত ১:৪ এর মধ্যে রাখার প্রস্তাব করেছে সংগঠনটি।

সমশিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের এক ও অভিন্ন বেতন কাঠামোতে অন্তর্ভূক্তিকরণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সরকার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, ডিপ্লোমা নার্স এবং ডিপ্লোমা কৃষিবীদদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করলেও সমশিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্ট, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, স্যাকমো এবং অন্যান্য সেক্টরে ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারীদের বেতন স্কেল ১০ম গ্রেডে উন্নীত করেনি। 

এতে উল্লেখ করা হয়েছে, এর ফলে কর্মক্ষেত্রে অসন্তোষ ও বৈষম্য তৈরি হয়েছে, যা বিভিন্ন সময় আন্দোলন, সংগ্রাম সৃষ্টি করে এবং দেশের জনগণ উক্ত আন্দোলন সংগ্রামের কারনে সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। এ অবস্তায় কর্মক্ষেত্রে অসন্তোষ-বৈষম্য দূর করতে বিভিন্ন সময় আন্দোলন সংগ্রামের অবসান করার লক্ষে সমশিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পন্ন ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের ৯ম জাতীয় পে স্কেল-২০২৫ এ এক ও অভিন্ন গ্রেডে বেতন স্কেল নির্ধারনের সুপারিশ করার জন্য অনুরোধ জানান নেতারা।

চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ ২০০৯-এর ধারাবাহিকতায় চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ ২০১৫ সংশোধন পূর্বক আগের ন্যায় সিলেকশন গ্রেড ও টাইম স্কেল পূর্নবহাল করে জাতীয় বেতন স্কেল ২০২৫ এ সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বহাল রাখা অথবা চার বছর অন্তর অন্তর উচ্চতর গ্রেডে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট মূল বেতনের ১০ শতাংশ; চিকিৎসা ভাতা সর্বনিম্ন ১০ হাজার; শিক্ষা ভাতা এক সন্তানের জন্য সর্বনিম্ন ৫ হাজার টাকা এবং দুই সন্তানের জন্য ১০ হাজার টাকা করা; টিফিন ভাতা সর্বনিম্ন ৫ হাজার; যাতায়াত ভাতা সর্বনিম্ন ৫ হাজার এবং নববর্ষ ভাতা মূল বেতনের এর ১০০ শতাংশ করার প্রস্তাব কর করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: চাকরি স্থায়ীর আগেই ৪৩তম বিসিএসের ৪ এএসপিকে অপসারণ

পাশাপাশি উৎসব ভাতা মূল বেতনের ২০০ শতাংশ; ধোলাই ভাতা সব গ্রেডের জন্য নির্ধারণ এবং সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা করা: বাড়ি ভাড়া ঢাকা মহানগরে জন্য মূল বেতনের ৯০ শতাংশ, বিভাগীয় শহরে ৮০, জেলা শহরের জন্য ৭০ এবং উপজেলা জন্য ৬০ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে।

তিন বছরের পরিবর্তে এক বছর অন্তর সাত দিনের ছুটিসহ শ্রান্তি-বিনোদন ভাতা; বিষেশায়িত সার্ভিসের মধ্যে চিকিৎসক, ফার্মাসিস্ট, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসারদের অন্তর্ভূক্তিকরণ ও বেতন কাঠামো নির্ধারন করার কথা বলা হয়েছে। 

ফার্মাসিস্টরা ক্লিনিক্যাল সেবা, ওষুধ পর্যালোচনা, পরামর্শ প্রদান, ওষুধ সংরক্ষণ ও বিতরণ টিকাদান কর্মসূচী গবেষণা ও শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সেক্টওে কর্মরত ফার্মাসিস্টদের বিশেষায়িত সেবা দানকারী হিসেবে ৯ম জাতীয় পেঙ্কেল ২০২৫-এ অন্তর্ভূক্ত করার দাবী জানান নেতারা।

এ ছাড়া পেনশন ৯০ শতাংশের পরিবর্তে ১০০ শতাংশ এবং আনুতোষিকের হার ২৩০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা বৃদ্ধি এবং ফার্মাসিস্টদের জন্য বিশেষ ভাতা ফার্মাসিস্ট থেকে শুরু করে চিকিৎসক, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, স্যাকমোসহ সব স্তরের মেডিকেল পার্সনদেন জন্য সমহারে বিশেষ ভাতা প্রবর্তন করার প্রস্তাব করছি অথবা রেশন সুবিধা প্রবর্তন করার প্রস্তাব করা হয়েছে।