কারও দুধে অ্যালার্জি, কারও চিংড়িতে, কেন ‘ফুড অ্যালার্জি’ পরীক্ষা করানো খুব জরুরি?
- ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:৫৫
খাবারে অ্যালার্জি মোটেই সাধারণ ব্যাপার নয়। কেউ দুধ খেলে বমি করেন, তো কারও চিংড়ি মাছ খাওয়ার পরেই সারা গায়ে র্যাশ বেরিয়ে যায়। কারও বেগুন খেলে গলা চুলকায় তো কারও আবার ইলিশ খেলে অম্বলে গলা-বুক জ্বলে। এর কোনওটিই কিন্তু হজম সংক্রান্ত সমস্যা নয়, বরং অ্যালার্জি। খাবার সহ্য না হওয়া আর খাবারে অ্যালার্জি দু’টি মোটেই এক নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভুলটা হয় এখানেই। নির্দিষ্ট কিছু খাবার খেলে বমি হওয়া বা অম্বল হওয়ার সমস্যাও কিন্তু ফুড অ্যালার্জির কারণেই হতে পারে। আসলে অনেকে ভেবে নেন, অ্যালার্জি মানেই হাঁচি-কাশি বা ত্বকের সমস্যা! কিন্তু তা নাও হতে পারে। ফুড অ্যালার্জির নানা রকম লক্ষণ রয়েছে। সতর্ক না হলে শরীরেরই ক্ষতি।
ফুড অ্যালার্জির নানা ধরন
নানা রকম খাবার থেকেই অ্যালার্জি হতে পারে। আপনার কাছে যা সুখাদ্য, অন্যের কাছে তাই ভয়ের কারণ। যেমন দুগ্ধজাত খাবারের ক্যালশিয়াম হাড়ের জন্য ভাল। অনেকের দুধ বা দুগ্ধজাত খাবারেই অ্যালার্জি থাকে যা ‘ল্যাক্টোজ় ইনটলারেন্স’ বলা হয়। দুধ হজম করতে যে উৎসেচক জরুরি সেই ল্যাক্টোজ তৈরিই হয় না শরীরে।
আরও একরকম অ্যালার্জি হল গ্লুটেন সেনসিটিভিটি। আটা, ময়দা বা দানাশস্য খেলে অ্যালার্জি হয়। গম, বার্লি ও বেশ কিছু দানাশস্য, বাদাম থেকেও হতে পারে গ্লুটেন অ্যালার্জি। ফল থেকে অ্যালার্জি হয় অনেকের। একে বলে ‘ফ্রুক্টোজ় অনটলারেন্স’। অর্থাৎ, ফাইবার হজম হয় না। গায়ে র্যাশ বেরিয়ে যাওয়া, বমি ভাব, অম্বলের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ফুড অ্যালার্জির বিপজ্জনক দিক হল অ্যানাফাইল্যাক্সিস। শ্বাসকষ্ট, গলা ফুলে যাওয়া, রক্তচাপ হঠাৎ করেই কমে যাওয়া, হৃৎস্পন্দের হার বেড়ে যাওয়া, জ্ঞান হারিয়ে ফেলার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
ফুড অ্যালার্জির পরীক্ষা করানো কেন জরুরি?
পরীক্ষা করালে ধরা পড়বে ঠিক কোন কোন খাবার খেলে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। সেই খাবারগুলি এড়িয়ে চলাই ভাল।
নিশ্চিত হওয়া যাবে রক্তে কোন কোন অ্যালার্জেন মিশে রয়েছে, এতে কী ক্ষতি হতে পারে। সেই মতো চিকিৎসা করা যাবে।
অ্যানাফাইল্যাক্সিসের মতো বিপজ্জনক অ্যালার্জির ঝুঁকি আছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তেমন থাকলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অ্যালার্জি আছে ভেবে পুষ্টিকর খাবারও এড়িয়ে চলেন অনেকে। এতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজের অভাব দেখা দেয়। তাই অ্যালার্জি টেস্ট করলে বোঝা যাবে ঠিক কোন কোন খাবারগুলি খেতে পারেন আর কোনগুলি নয়।
শ্বাসকষ্ট, এগ্জিমা, বারবার পেটের সমস্যা বা ঘন ঘন অম্বল হওয়ার জন্য অ্যালার্জি দায়ী কি না, তা-ও ধরা পড়বে পরীক্ষায়। ফলে ভুল ওষুধ খাওয়ার প্রবণতা কমবে।