৫% বাড়ি ভাড়ায় খুশি নন, ফের আন্দোলনে শিক্ষকরা

শিক্ষকদের আন্দোলন
শিক্ষকদের আন্দোলন © সংগৃহীত

তিন দফা দাবিতে চলমান শিক্ষক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বাড়ি ভাড়া ৫ শতাংশ বৃদ্ধিতে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। রবিবার (১৯ অক্টোবর) মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ সম্মতিকে প্রাথমিক বিজয় হিসেবে অভিহিত করলেও এতে খুশি নন শিক্ষকরা। পরিপূর্ণ দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

শিক্ষকরা জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় আজ এই সম্মতি প্রজ্ঞাপন দিয়েছে, তা আন্দোলন শুরুর আগেই আমাদের দিতে চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা তাতে রাজি হয়নি। আমাদের চাওয়া ২০% ভাড়ি ভাড়া, ৭৫% উৎসব ভাতা ও ১৫০০টাকা মেডিকেল ভাতা। সেই প্রজ্ঞাপন যত সময় পূরণ না হবে, তত সময় আন্দোলন চলবে। 

এক শিক্ষক জানান, আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপনটি দেওয়া হয়েছে, সেটা আসলে আগেই প্রস্তুত ছিল। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বারবার কথা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে। কিন্তু আমরা স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছি—এই প্রজ্ঞাপন আমাদের দাবির প্রতিফলন নয়। আমাদের দাবি ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা ও ১,৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা। এসব দাবি পূরণ করতে হবে বলে জানান তিনি।

বিষয়টি নিয়ে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া পোস্টে বলেন, ‘৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়ার প্রজ্ঞাপন আমাদের আন্দোলনের প্রাথমিক বিজয়। কিন্তু ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা ও ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত আমাদের সকল কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’

এদিকে মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের বিদ্যমান বাজেট সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় আগামী ১ নভেম্বর থেকে মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা প্রদান করা হবে। তবে সর্বনিম্ন বাড়িভাড়া ভাতা হবে ২ হাজার টাকা।

এতে আরও বলা হয়েছে, বাড়িভাড়া ভাতা পরবর্তী জাতীয় বেতনস্কেলের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট এমপিও নীতিমালা ও সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী নিয়োগের শর্তাবলী মেনে চলা বাধ্যতামূলক। ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো বকেয়া থাকবে না এবং সকল আর্থিক বিধি-নিষেধ অবশ্যই পালন করতে হবে। এছাড়া, ভবিষ্যতে যদি ভাতা সংক্রান্ত কোনো অনিয়ম ধরা পড়ে, তবে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়বদ্ধ থাকবে। 

এর আগে গত ১৬ অক্টোবর আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আবরারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এরপর শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার সাংবাদিকদের বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে ১ নভেম্বর থেকে ৫ শতাংশ (বাড়িভাড়া) তারা দিতে পারবে এবং সেটি ন্যূনতম দুই হাজার টাকা থাকবে। এখন যেখানে টাকা নেই, সেখানে এর থেকে বেশি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এটা শিক্ষক-কর্মচারীদের জানানো হয়েছে। সামনের অর্থ বছরের বাজেটে যেন আরও কিছু শতাংশ বৃদ্ধি করা যায় সেটার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, কিন্তু শিক্ষক-কর্মচারীরা সেই প্রস্তাবে রাজি না। তাঁরা বলেছেন, এখন ১০ শতাংশ দিতে হবে, সামনের বছর ১০ শতাংশ দিতে হবে।