জুলাই সনদ গণতন্ত্রের জন্য অনন্য ঘটনা: মির্জা ফখরুল
- ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:২৫
জুলাই সনদকে গণতন্ত্রের জন্য অনন্য ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘গতকাল শুক্রবার একটি ঐতিহাসিক বলতে গেলে পলিটিক্যাল ইভেন্ট হয়েছে। আমরা বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল ঐতিহাসিক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছি এবং এটা সত্যি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনন্য ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘যে ঘটনা রাষ্ট্র কাঠামো পরিবর্তন, মূলনীতির সংশোধন এবং একই সঙ্গে আমাদের রাজনীতিকে আরো স্বচ্ছ করা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া, গণতন্ত্রকে সত্যিকার অর্থেই যে প্রতিষ্ঠানগুলো আছে সেগুলোকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আরো বেশি উন্নত করা, গণতন্ত্রকে গণতন্ত্রের মতো চলতে দেয়া এবং গণতান্ত্রিক কৃষ্টি, অর্থাৎ ডেমোক্র্যাটিক কালচার পুরোটা এই ব্যাপারগুলো সমাজের মধ্যে সব কটি নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। প্রায় দীর্ঘ সাত আট মাস কাজ করে তারা এটা নিয়ে এসেছে।’
আজ শনিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর গ্রিন রোডে পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের এক সাধারণ সভা ও সম্মেলন হয়। সম্মেলনে নতুন নেতৃত্ব হিসেবে মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুকে সভাপতি ও হুমায়ুন কবিরকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করেন গঠিত নির্বাচন কমিশনার আনোয়ার হোসাইন।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ওই সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব সবাইকে উদ্দেশে বলেন, আর রাস্তায় নয়, সব কর্মকাণ্ড সংসদকেন্দ্রিক করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যে ১৫ বছরে যে গার্বেজ তৈরি করে গেছে, যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গেছে, সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে সেগুলোকে এক বছরের মধ্যে সব ঠিক করে ফেলা এটা কারো পক্ষেই সম্ভব নয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্ব নিয়ে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে একটা আবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্ট আসবে সেই পার্লামেন্টারি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য সেই দিকে আমাদেরকে নজর দিতে হবে। সমস্ত কর্মকাণ্ডকে পার্লামেন্ট কেন্দ্রিক করতে হবে।
তিনি বলেন, এটা না করলে পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি ফাংশন করবে না…এ কথাগুলো আমাদের বুঝতে হবে। পৃথিবীর যেসব দেশে পার্লামেন্ট ডেমোক্রেসি সফল হয়েছে সবগুলোতে কিন্তু পার্লামেন্ট হচ্ছে কেন্দ্রবিন্দু রাজনীতির…সেখানে (সংসদ) করতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাস্তা থেকে উঠে চলে আসতে হবে পার্লামেন্টে। আর কতদিন রাস্তায় থাকবেন? ৫০ বছর তো আমরা রাস্তায় চলছি।
তিনি বলেন, এগুলোকে ঠিক করে এই জাতীয় সনদের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে যদি আমরা একটা কালচারে পরিণত করতে পারি সেই চেষ্টা আমাদের করতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই নির্বাচন যেন অনুষ্ঠিত হয়, সবাই যেন অংশগ্রহণ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাব, আসুন আমরা সবাই যেভাবে ছোটোখাটো আমাদের ভিন্নতা, যে দূরত্ব আছে সেকে দূর করে যেভাবে আমরা আপনার সনদ স্বাক্ষর করতে পেরেছি….আসুন আগামী নির্বাচন আমরা সেইভাবে আমাদের দূরত্বকে দূর করে আমরা আমাদের নির্বাচনটাকে একটা সত্যিকার অর্থেই একটা অর্থপূর্ণ নির্বাচনের পরিণত করি।
অর্থাৎ একটা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক, সকলের কাছে নির্বাচন হোক এবং সেই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে যারা নির্বাচিত হবেন তারা আমাদের পার্লামেন্টকে সত্যিকার অর্থে প্রাণবন্ত করে গড়ে তুলবেন, অর্থবহ করবেন এবং সেই পার্লামেন্ট হবে আমাদের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু এভাবে আমরা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। গণতন্ত্রকে যদি আমরা সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হই তাহলে আমার ধারণা আমার বিশ্বাস সেখানে সকল শ্রেণি, শ্রমিক শ্রেণির দাবি-দাওয়া সেখানে পূরণ হবে, স্বীকৃত হবে।
আরও পড়ুন: চার দাবিতে আন্দোলনে নামছেন এইচএসসির ফল পাওয়া শিক্ষার্থীদের একাংশ!
গতকালের (শুক্রবার) জাতীয় সংসদ ভবনে সংঘর্ষের ঘটনা গণতন্ত্রকে সাহায্য করবে না মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটা আনফরচুনেট ইনসিডেন্ট ঘটেছে যে, কালকে ছেলেরা একটা গ্রুপ তারা এখানে (সংসদ ভবনের অনুষ্ঠানের সামনে) এসে বসে যায়। তারপরে একটা আনফরচুনেট ঘটনা ঘটে। পুলিশ এবং ছাত্রদের মধ্যে একটা আপনার বলা যেতে পারে যে একটা ভায়লেন্সের ঘটনা ঘটেছে।
তিনি বলেন, এই সময়ে এই ধরনের ঘটনাগুলো গণতন্ত্রকে সাহায্য করবে না। আমার মনে হয় যে সকলের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা উচিত কারণ এটা কি অন্তবর্তীকালীন সরকার। এই সরকার এখন পর্যন্ত যতগুলো কাজ করছে তারা ভালো কাজ করার চেষ্টা করেছে। আমরা যে যতই বলি, এক বছরের মধ্যে সমস্ত জঞ্জালগুলো শেষ করে ফেলা সম্ভব নয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই নির্বাচন যেন অনুষ্ঠিত হয়, সবাই যেন অংশগ্রহণ করে রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানাব আসুন আমরা সবাই যেভাবে ছোটোখাটো আমাদের ভিন্নতা, যে দূরত্ব আছে সেকে দূর করে যেভাবে আমরা আপনার সনদ স্বাক্ষর করতে পেরেছি….আসুন আগামী নির্বাচন আমরা সেইভাবে আমাদের দূরত্বকে দূর করে আমরা আমাদের নির্বাচনটাকে একটা সত্যিকার অর্থেই একটা অর্থপূর্ণ নির্বাচনের পরিণত করি।
তিনি বলেন, অর্থাৎ একটা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক, সকলের কাছে নির্বাচন হোক এবং সেই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে যারা নির্বাচিত হবেন তারা আমাদের পার্লামেন্টকে সত্যিকার অর্থে প্রণবন্ত করে গড়ে তুলবেন, অর্থবহ করবেন এবং সেই পার্লামেন্ট হবে আমাদের রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু এভাবে আমরা যেন সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। গণতন্ত্রকে যদি আমরা সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হই তাহলে আমার ধারণা আমার বিশ্বাস সেখানে সকল শ্রেণি, শ্রমিক শ্রেণির দাবি-দাওয়া সেখানে পূরণ হবে, স্বীকৃত হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের দাবি-দাওয়ার প্রতি নিজের এবং তার দলের সমর্থনের কথাও ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শ্রমিক দলের প্রধান সমন্বয়কারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমদ, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মোস্তফা খান, আইয়ুব আলী, আবু সালেহ মো. তোফায়েল চৌধুরী, ফরিদ উদ্দিন খান, মাহমুদুল করীম, মাহবুবুল হক রিপন, বিদ্যুৎ শ্রমিক ইউনিয়নের আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক দলের সুমন ভূঁইয়া, উত্তরের কামরুজ্জামান প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।