সাড়ে ১০ কোটিতে ঢাকায় কাবাডি বিশ্বকাপ, আসছে আর্জেন্টিনাও
- ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:২৩
প্রায় ১০ কোটি ৪৪ লাখ টাকায় ঢাকায় প্রথমবারের মতো আইকেএফ নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজিত হতে যাচ্ছে। আগামী ১৫ থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী জাতীয় ইনডোর স্টেডিয়ামে এই বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে অংশ নেবে ১৪টি দেশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই টুর্নামেন্ট আয়োজনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশন (বিকেএফ)। এ সময় বিশ্বকাপের অফিসিয়াল লোগোও উন্মোচন করা হয়।
২০১২ সালে প্রথম নারী কাবাডি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর এবারের আসরে স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও আর্জেন্টিনা, চাইনিজ তাইপে, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইরান, ভারত, জাপান, কেনিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নেপাল, থাইল্যান্ড, উগান্ডা এবং জাঞ্জিবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। এছাড়া স্ট্যান্ডবাই দল হিসেবে রয়েছে পাকিস্তান ও পোল্যান্ড। এবার দুই গ্রুপে রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে খেলার সম্ভাবনাই বেশি। অবশ্য, টুর্নামেন্টের ২-৩ দিন আগেই টুর্নামেন্ট ডিরেক্টর ড্র পদ্ধতি ঠিক করবেন।
বিপুল অর্থ খরচে বিশ্বকাপ আয়োজনের ব্যাখ্যায় ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ সোহাগ বলেন, ‘তারুণ্যের উৎসবের অংশ হিসেবে আমরা বিশ্বকাপ আয়োজন করছি। বিশ্বকাপ আয়োজন যেকোনো দেশের জন্যই মর্যাদার। “বিউটিফুল বাংলাদেশ” ভাবনা নিয়ে আমরা এর সঙ্গে বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি। জাতীয় খেলা হিসেবে আমরা কাবাডিকে সামনে নিতে চাই। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে ইউরোপের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক তৈরি হবে।’
বিশ্বকাপের মতো একটি আসর আয়োজন স্বাভাবিকভাবেই বেশ ব্যয়বহুল। ১৪টি দেশকে নিয়ে আয়োজিত হতে যাওয়া এই নারী কাবাডি বিশ্বকাপের জন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয় থেকে ৫ কোটি টাকা সহায়তার নিশ্চয়তা পেয়েছে ফেডারেশন। বাকি অর্থ বিভিন্ন স্পনসরের সহযোগিতায় সংগ্রহ করা হবে।
এ নিয়ে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফেডারেশন অংশগ্রহণকারীদের বিমান ব্যয় বহন করবে। তারা ঢাকা বিমানবন্দরে আসার পর থেকে আবার দেশে ফেরা পর্যন্ত এয়ারপোর্ট পর্যন্ত সকল ব্যয় বহন করতে হবে কাবাডি ফেডারেশনকে। আমরা ফেডারেশনের গচ্ছিত ফান্ড ব্যবহার করব না। আমাদের লক্ষ্য পৃষ্ঠপোষকতা এনে আরও ফেডারেশনের রাজস্ব বৃদ্ধি করা।’
ফুটবল ও ক্রিকেট ছাড়া দেশের বেশিরভাগ ক্রীড়া ফেডারেশনই তীব্র আর্থিক সীমাবদ্ধতার মুখে রয়েছে। ফলে অনেক প্রতিভাবান দাবাড়ু, অ্যাথলেট ও সাঁতারু আর্থিক অসঙ্গতির কারণে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারেন না। একইভাবে, অর্থের অভাবে অনেক ফেডারেশন দেশে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট আয়োজনের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়। এই প্রেক্ষাপটে নারী কাবাডি বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের ৫ কোটি টাকার অনুদান অনুমোদন ও দ্রুত অনুমতি প্রদান ক্রীড়াঙ্গনের জন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে নিঃসন্দেহে। এরপরও বিশ্বকাপের আলাদা একটি মর্যাদা ও গুরুত্ব রয়েছে যা অন্য সকল আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের চেয়ে অবশ্যই ভিন্ন। কাবাডি ফেডারেশনের চাহিদার ভিত্তিতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ প্রাথমিক মূল্যায়ন করেছে। এরপর ক্রীড়া মন্ত্রণালয় তাদের পর্যবেক্ষণ দিয়েছে এরপর অর্থ মন্ত্রণালয় এটা অনুমোদন দিয়েছে।’
কাবাডি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে এ-ও জানানো হয়, এই আয়োজনের জন্য ইতোমধ্যে শহীদ সোহরাওয়ার্দী জাতীয় ইনডোর স্টেডিয়াম সরকারকে বরাদ্দ দিয়েছে। বিদেশি দলগুলোর আগমন, প্রস্থান, নিরাপত্তা, আবাসন ও স্থানীয় যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে সমন্বয়ের কাজ চলমান রয়েছে।
আসরের ম্যাটে লড়াইয়ের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় নারী কাবাডি দল বর্তমানে বিকেএসপিতে নিবিড় প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে। বিশ্বকাপে বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে এস এম নেওয়াজ সোহাগ বলেন, 'কাবাডির বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন পঞ্চম। দুই অথবা তিনে যাওয়ার সুযোগ আছে আমাদের। আমরা যেন সে জায়গায় যেতে পারি সে চেষ্টাই থাকবে।'