মিরপুরে অগ্নিকাণ্ড
রাসায়নিকের আগুন নেভাতে সময় লাগবে: ফায়ার সার্ভিস
- টিডিসি রিপোর্ট
- ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:১৬
রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের রাসায়নিক গুদামের আগুন নেভাতে দীর্ঘ সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (ঢাকা) কাজী নজমুজ্জামান। বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর রূপনগরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শনের গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
কাজী নজমুজ্জামান বলেন, ‘এখনো প্রচণ্ড ধোঁয়া রয়েছে। সকালে আমরা প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে রাসায়নিক গুদামের দরজা খুলেছি। ভেতরের অবস্থা দেখেছি, আমাদের কার্যক্রম চলমান। তবে ধোঁয়ার কারণে এখন আমাদের অভিযান চালানো নিরাপদ নয়। অভিযান শেষ করতে দীর্ঘ সময় লাগবে। বিকেলে আমাদের উচ্চ পর্যায়ের টিম এসে দেখবেন। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, কী করা যায়।’
তিনি বলেন, ‘নির্দিষ্ট দুরত্ব পজায় রেখে সবাইকে কাজ করতে বলাহয়েছে। বিভিন্ন কেমিকেল থেকে টক্সিক গ্যাস তৈরি হয়েছে। এই গ্যাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে গেলে মানুষের ত্বক, ফুসফুস, হার্টের সমস্যা হতে পারে। তাই ঘটনাস্থলের চতুর পাশে ফিতা দিয়ে বেষ্টনী দেয়া হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে কাজ করছি, যখন নিরাপদ হবে তখন এটি খুলে দেওয়া হবে। আমরা মাইকিং করে স্থানীয়দের বলছি, সবাই দূরে থাকুন, নিজেদের নিরাপদে রাখুন। দীর্ঘ সময় পর মিরপুর রূপনগরের কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন সোয়া ২টায় নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস।’
এখনো কতজন নিখোঁজ রয়েছেন বা নিখোঁজের তালিকা করেছেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো অভিযান চালাচ্ছি, বাকি বিষয়গুলো প্রশাসন এবং অন্য দপ্তরগুলো দেখছে।’
কাজী নজমুজ্জামান বলেন, ‘রাসায়নিকের বিষয়টি খুবই বিপজ্জনক। রাসায়নিক সামগ্রী গুদামজাত করার যে নীতিমালা রয়েছে, সেটি না মানা হলে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিকের মিশ্রণে বড় ধরনের বিক্রিয়া হতে পারে। এই কারণে একটু বেশি সময় লাগবেই। যেহেতু কেমিকেল গুদাম তালাবদ্ধ ছিল তাই আমাদের ধারণা ভেতরে কেউ নেই। তবে অভিযান শেষ হলে বিস্তারিত জানা যাবে। পাশাপাশি অবৈধ রাসায়নিক গুদামজাতের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গোডাউনের ভেতরে কাজ চলছে, প্রক্রিয়াটি এখনো শেষ হয়নি। এ পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি ভেতরে আর কোনো লাশ নেই। তবে ভেতরে প্রচুর ধোঁয়া রয়েছে। পুরোপুরি অগ্নিনির্বাপণ প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরই নিশ্চিতভাবে বলা যাবে, আরও লাশ আছে কি না।’
কাজী নজমুজ্জামান বলেন, ‘এ পর্যন্ত আমরা নিশ্চিত করতে পেরেছি, গার্মেন্টসেন ভেতরে আর কোনও মরদেহ নেই। তবে রাষায়নিক গুদামের ভেতরে যেহেতু প্রচুর ধোঁয়া রয়েছে, পুরোপুরি অগ্নিনির্বাপণ প্রক্রিয়া সমাপ্ত হওয়ার পর বলতে পারব আরও কোনো মরদেহ রয়েছে কি না।’
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে বলেন, ব্যবসায়ীরা নিয়ম-নীতি মানছেন না, অবৈধভাবে রাসায়নিক গুদাম তৈরি করেছেন। তাদের বিষয়ে সরকারের অবস্থান কঠোর, অবৈধ কেমিকেল গুদাম মালিকদের আইনের আওতায় আনা হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর শিয়ারবাড়ির শাহআলম কেমিক্যাল নামে একটি রাসায়নিকের গোডাউনে আগুন লাগার পর তা ছড়িয়ে পড়ে পাশের একটি গার্মেন্টস কারখানায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পৌনে ১২টার মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। শেষ পর্যন্ত মোট ১২টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। সর্বশেষ ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে।