বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ
শীঘ্রই হবে ঢাবি ও কেন্দ্রীয় কমিটি
- টিডিসি ডেস্ক
- ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:০০
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে আত্মপ্রকাশ ঘটে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন শিক্ষার্থীবান্ধব আন্দোলন এবং দাবি-দাওয়ার পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা রাখলেও, সাম্প্রতিক সময়ে সংগঠনটির কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখায় এ স্থবিরতা সবচেয়ে স্পষ্ট, যার প্রভাব পড়েছে ২০২৫ সালের ডাকসু নির্বাচনেও।
এই প্রেক্ষাপটে সংগঠনের ভেতরে কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় দুই পর্যায়েই নেতৃত্বে পরিবর্তনের আলোচনা জোরালো হয়েছে। সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির ওপর আস্থা হারিয়েছেন অনেক নেতাকর্মী। অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলমান সমালোচনার কারণে নতুন নেতৃত্ব গঠনের দাবি উঠেছে। ফলে দ্রুতই ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি এবং পরে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতাকর্মীদের বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হয়। জানা গেছে, ডাকসু নির্বাচনে ভালো ফল পাওয়া প্রার্থীদের নতুন কমিটির নেতৃত্বে আনার চিন্তা করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংসদের জিএস হিসেবে নির্বাচিত সাদমান আব্দুল্লাহকে সভাপতি এবং ডাকসু সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা মো. মাহতাব ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি ২১ বা ২৩ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। এ ছাড়া ডাকসুতে অংশ নেওয়া ও পরিচিত মুখ আরও কয়েকজনও নতুন কমিটিতে স্থান পেতে পারেন।
ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের এক নেতা জানান, ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়ে নেতৃত্বের যে সক্ষমতা দেখিয়েছে একঝাঁক শিক্ষার্থী, তাদের নিয়েই আমরা নতুন কমিটি গঠন করছি। শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়ায় বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারবে এমন নেতৃত্বই আমরা সামনে আনছি।
কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরেক নেতা জানান, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ। দু-এক দিনের মধ্যেই নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। ডাকসুতে যারা প্রভাব রেখেছেন, তাদের মূল নেতৃত্বে আনার পরিকল্পনা আছে।
ঢাবি কমিটির পরপরই ছাত্র অধিকার পরিষদের তৃতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে ভোটের মাধ্যমে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হবে। যদিও বর্তমান কমিটির মেয়াদ এখনো শেষ হয়নি (২০২৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় কাউন্সিলে নির্বাচিত হয়েছিলেন সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা এবং সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান), তবে সংগঠনের সাম্প্রতিক দুর্বল অবস্থান ও ডাকসুতে ভরাডুবির কারণে নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
সূত্র মতে, কেন্দ্রীয় সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান। আর সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য আলোচনায় রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মোহাম্মদ সানাউল্লাহ এবং সদস্য সচিব রাকিবুল ইসলাম।
গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র হাসান আল মামুন বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত ছাত্র অধিকার পরিষদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমরা নতুন করে সংগঠনকে ঢেলে সাজাতে চাই। জনপ্রিয় ও সক্রিয় শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সামনে আনাই আমাদের লক্ষ্য।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ (বর্তমান ছাত্র অধিকার পরিষদ) থেকে নুরুল হক নুর ভিপি এবং আখতার হোসেন সমাজসেবা সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু ২০২৫ সালের ডাকসু নির্বাচনে কোনো পদেই জয়লাভ করতে পারেনি পরিষদ-সমর্থিত প্রার্থীরা। তবে এবার নতুন নেতৃত্ব ও সুসংগঠিত কার্যক্রমের মাধ্যমে আবারো শিক্ষার্থীদের আস্থাভাজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।