চাকসু নির্বাচনের তিনদিন আগে ছাত্রদল নেতা আজীবন বহিষ্কার, নেপথ্যে কী?
- ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:০৮
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ঠিক দুইদিন আগেই আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন উর রশীদ মামুনকে। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দায়িত্বে অবহেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের কারণে এ বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
রবিবার (১২ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও দায়িত্বে অবহেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোহাম্মদ মামুন উর রশিদ মামুনকে সাংগঠনিক পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হলো।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সাথে কোনরূপ সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনাও প্রদান করা হলো।
এদিকে ছাত্রদলের একটি সূত্র বলছে, মামুন দীর্ঘ সময় ধরে সততার সাথে সংগঠন করেছে। আওয়ামী আমলে জেল-জুলুম, রিমান্ডে প্রচন্ড নির্যাতনের মাঝেও দলের জন্য লড়াই করেছে মামুন। জানা গেছে, আসন্ন চাকসু নির্বাচনে দলীয় প্যানেলে মামুনের অনুসারী বেশকিছু ত্যাগী নেতা পদ না পাওয়ায় স্বতন্ত্র কিছু পদে সমর্থন দিয়েছেন মামুন। ৫ আগস্টের পরে ছাত্রদল করা কর্মীদের ছাত্রদলের প্যানেলে জায়গা হলেও ত্যাগীদের জায়গা হয়নি। তাই নিজের দায়বদ্ধতা থেকে কিছু কর্মীর পাশে দাঁড়িয়েছে মামুন। ছাত্রদলের বেশকিছু নেতা কর্মী স্বতন্ত্র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই তাঁকে বহিষ্কার করা হলো বলে দাবি সূত্রটির।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের এক কর্মী বলেন, মামুনকে বলা হয় চবি ছাত্রদলের সবচেয়ে ত্যাগী নেতা। জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখ সারির অনেক কর্মীকে চাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেলে স্থান না দেওয়ায় মানতে পারেননি মামুনুর রশিদ মামুন। তাই নিজে কিছু কর্মীকে সহযোগিতা করছেন। এজন্য তাঁকে আজীবন বহিষ্কার হতে হলো।
এর আগে ২০২৩ সালের (১১ আগস্ট) ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চবি শাখার ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন হয়। এতে মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মহসিন সভাপতি ও আব্দুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এছাড়া সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে মামুনুর রশিদ মামুন, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াসিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মো. সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়ের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
২ বছরের জন্য কমিটির অনুমোদন দেয় ছাত্রদল। এরই মধ্যে ২ মাস আগেই মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও পূর্নাঙ্গ হয়নি কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ছাত্রদল কর্মী অপরাধ করলেও ৫ জনের বেশি কমিটি না থাকায় এর দায় নিতে চায় না দলের কোনো নেতা।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। বিলুপ্ত ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন খোরশেদ আলম ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম। ২০১৬ সালের অক্টোবরে ঘোষিত ওই কমিটি প্রায় চার বছর ‘দায়িত্বে’ ছিল।