মানসিকভাবে স্থির ব্যক্তিরা ফেসবুকে যে বিষয়গুলো শেয়ার করেন না
- ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ১১:৩৩
মানসিকভাবে স্থির, আত্মবিশ্বাসী এবং পরিপক্ব ব্যক্তিরা নিজের আবেগ, চিন্তা এবং ব্যক্তিগত জীবনের প্রতি থাকে অত্যন্ত সচেতন। এই আত্মসচেতনতা তাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রতিফলিত হয়। বিশেষ করে, ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে তারা যা শেয়ার করেন না তাই অনেক সময় তাদের মানসিক ভারসাম্যের বড় প্রমাণ। নিচে তুলে ধরা হলো এমন কিছু বিষয়, যা একজন মানসিকভাবে স্থির ব্যক্তি সাধারণত ফেসবুকে প্রকাশ করেন না।
সম্পর্কের টানাপোড়েন
মানসিকভাবে পরিণত ব্যক্তিরা জানেন সমস্যার সমাধান হয় ঘর বা সম্পর্কের মধ্যে, ফেসবুকে নয়। তাই তারা তাদের দাম্পত্য কলহ, বন্ধুত্বে সমস্যা বা পারিবারিক টানাপোড়েন জনসম্মুখে তুলে ধরেন না। তারা জানেন ব্যক্তিগত বিষয় ব্যক্তিগত থাকাই শ্রেয়।
অতিরিক্ত আত্মপ্রচারণা
নিজের প্রতিটি অর্জন বা সুখের মুহূর্ত পোস্ট করা, বা অন্যের কাছে নিজেকে বিশেষ করে তোলার প্রচেষ্টা মানসিক অস্থিরতার ইঙ্গিত হতে পারে। স্থির ব্যক্তিরা আত্মপ্রত্যয়ের উপর ভরসা রাখেন, বাহবা পাওয়ার উপর নয়। তারা কাজ দিয়ে প্রমাণ করেন, কথায় নয়। তাই তারা এসব বিষয় ফেসবুকে প্রচার করেন না।
অতিরিক্ত নেতিবাচকতা বা অভিযোগের বহিঃপ্রকাশ
‘আজকালকের মানুষের বিশ্বাস নেই’, ‘সবাই স্বার্থপর’ এমন ধরনের স্ট্যাটাস আসলে নিজের হতাশা বা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। মানসিকভাবে স্থির ব্যক্তি নেতিবাচক চিন্তা ছড়াতে পছন্দ করেন না। তারা সমাধানমুখী, অভিযোগনির্ভর নন।
অপ্রয়োজনীয় রাজনৈতিক বা ধর্মীয় বিতর্ক
এরা বুঝে থাকেন সোশ্যাল মিডিয়ায় মতাদর্শ নিয়ে বিতর্কে জড়ানো অনেক সময় ফলপ্রসূ নয় বরং বিভেদ সৃষ্টি করে। তাই তারা সচেতনভাবে এসব এড়িয়ে চলেন। তাদের বক্তব্য থাকে সংযত ও যুক্তিনির্ভর।
অন্যকে ছোট করে তোলা বা অপমানজনক মন্তব্য
তাদের আত্মসম্মান এতটাই দৃঢ় যে, অন্যকে অপমান করে নিজেকে বড় দেখানোর প্রয়োজন হয় না। কারো বিরুদ্ধে খারাপ মন্তব্য বা কটাক্ষ করা তাদের চরিত্রের সঙ্গে যায় না। তারা শ্রদ্ধাশীল, এমনকি দ্বিমতের ক্ষেত্রেও।
নিজের চলাফেরা ও অনুভূতির বিস্তারিত বর্ণনা
‘আজ মন খারাপ’, ‘আজ একা লাগছে’, ‘সিনেমা দেখে এলাম’ এধরনের স্ট্যাটাস মানসিক শূন্যতা বা অ্যাটেনশন চাওয়ার লক্ষণ হতে পারে। স্থির মানুষরা নিজের আবেগ নিজের মধ্যে রাখেন এবং কাছের মানুষদের সঙ্গে ভাগ করে নেন ব্যক্তিগতভাবে। তাদের ব্যক্তিগত জীবন ফেসবুক নির্ভর নয়।
অন্যের অনুমতি ছাড়া তাদের ছবি বা তথ্য শেয়ার করা
এই শ্রেণির মানুষ সম্মান এবং গোপনীয়তার মূল্য জানেন। তাই পরিবারের সদস্য, বন্ধু বা সহকর্মীদের ব্যক্তিগত ছবি বা তথ্য অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করেন না। কারণ প্রাইভেসি ম্যাটারস।
খাবারের ছবি
খাবার ভালো লাগলে ছবি তুলতেই পারেন। শেয়ার করতেই পারেন। তবে প্রতিটি খাবারের ছবিই যদি বারবার শেয়ার করেন, তাহলে মানুষ আর ইতিবাচক ভাবে নিবে না। মানসিকভাবে স্থির ব্যক্তিরা ঘনঘন খাবারের ছবি ফেসবুকে প্রচার করে না।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
মানসিকভাবে স্থির, আত্মবিশ্বাসী এবং পরিপক্ব ব্যক্তিরা তাদের ভবিষ্যতের পরিকল্পনা কখনো ফেসবুকে প্রচার করে না। তারা নিজেদের
ফেসবুক আমাদের নিজেকে প্রকাশের একটি বড় মাধ্যম হলেও, কী শেয়ার করব আর কী করব না তা একজন মানুষের মানসিক অবস্থা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অনেক কিছুই প্রকাশ করে। মানসিকভাবে পরিপক্ব ও স্থির ব্যক্তিরা জানেন সবকিছু সবার জানার দরকার নেই। আর সব আবেগ প্রকাশ না করাও একধরনের শক্তি।