মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর কোলেজুড়ে এলো পুত্রসন্তান, পিতা কে?

ভারসাম্যহীন নারীর কোলে তার সদ্যজাত পুত্রসন্তান
ভারসাম্যহীন নারীর কোলে তার সদ্যজাত পুত্রসন্তান © টিডিসি

ময়মনসিংহের নান্দাইলে মানবিকতার গভীর এক দৃশ্যের জন্ম দিয়েছে এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর মাতৃত্ব। সদ্যজাত পুত্রসন্তানকে বুকে আগলে পথেঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। শিশুটির পিতা কে—এ প্রশ্নের উত্তর কেউ জানে না, এমনকি মা নিজেও স্পষ্ট করে বলতে পারেন না। তবে সন্তানের প্রতি তার মমতা ও স্নেহ দেখে আবেগাপ্লুত স্থানীয়রা। বিষয়টি মানবিক সহায়তা ও নিরাপত্তার দাবিও তুলেছে এলাকাবাসীর মধ্যে।

মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা সদরে সন্তান নিয়ে তিন-চার দিন ধরে ঘুরতে দেখা যায়।

মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর পরিচয় জানতে চাইলে তার নাম ময়না বলে জানান। বাড়ির ঠিকানা বলছে আঠারবাড়ি। এ ছাড়া আর কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারেননি। শুধু বলেছেন, ‘আমাকে আমার ছেলে খাওয়াবে।’ তার চোখেমুখে ছিল মাতৃত্বের এক অদ্ভুত দ্যুতি। তার কথা হৃদয়ে নাড়া দেয় উপস্থিত সবার।

তবে ওই নবজাতকের বাবা কে? এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে নান্দাইল চৌরাস্তায় এক সিএনজিচালকের নাম বলেছেন তিনি।
অনেকেই শিশুটিকে নিতে চাইলে তিনি দৃঢ়ভাবে নিষেধ করেন। মা মানসিক ভারসাম্যহীন নারী হলেও মা-ই। মায়ের সঙ্গে সন্তানের তুলনা হয় না, এই চিরন্তন সত্যটি যেন আরও একবার প্রমাণ হয়ে ধরা দিল নান্দাইলে।

স্থানীয়দের মুখে শোনা যায়, এই মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে আগে আঠারবাড়ি এলাকায় এবং নান্দাইল চৌরাস্তা এলাকায় দেখা গেছে। এখন সে কোলে করে রাজপুত্রকে নিয়ে ঘুরছেন। তিন-চার দিন আগে সে শিশুটি প্রসব করেন। 

এ ঘটনা একদিকে যেমন মানবিকতার প্রশ্ন তোলে, অন্যদিকে স্মরণ করিয়ে দেয় মায়ের অকৃত্রিম ভালোবাসার কথা। এই মানসিক ভারসাম্যহীন নারী মা সমাজের কাছে এক বার্তা পৌঁছে দিলেন– মাতৃত্বের বন্ধন অপ্রতিরোধ্য, তা কোনো মানসিক বা সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কাছে হার মানে না।

ওই মা মানসিক ভারসাম্যহীন নারীসহ সন্তানের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়টি জোরদার করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সারমিন ছাত্তার জানান, মা হওয়া নারীর খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।