শেখ হাসিনাসহ ডিজিএফআই ও র‌্যাবের সাবেক আট ডিজির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

শেখ হাসিনা
শেখ হাসিনা © ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিরোধী লোকদের গুম করে বন্দি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। 

দীর্ঘ অবৈধ শাসনামলে গুম করে র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেল ও জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেন্টারে (জেআইসি) বন্দি রেখে নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ বুধবার এ অভিযোগ আমলে নেন। একইসঙ্গে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। এবং দুই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে গুমের পর র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেল ও জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেন্টারে (জেআইসি) নিয়ে নির্যানের অভিযোগ আনা হয়েছে।

 প্রথম অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ১৭ জন এবং দ্বিতীয় অভিযোগে ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। দুই তালিকায় রয়েছেন ডিজিএফআইয়ের ৫ জন সাবেক মহাপরিচালকসহ অধিকাংশ সেনা কর্মকর্তা। এদিন ট্রাইব্যুনালে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে ভিন্ন মতাদর্শের ব্যক্তি কিংবা রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক, লেখক-সাংবাদিকদের তুলে নিয়ে গোপন বন্দিশালায় রেখে নির্যাতনের বীভৎস বর্ণনা তুলে ধরেন এবং গুম সংক্রান্ত পৃথক দুটি অভিযোগ আমলে নিয়ে পরোয়ানা জারি আবেদন জানান তিনি। পরে পাঁচটি অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

এর আগে বুধবার (০৮ অক্টোবর ২০২৫) সকালে শেখ হাসিনাসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) ট্রাইব্যুনালের সংশ্লিষ্ট শাখায় দাখিল করেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

প্রথম অভিযোগে আসামি যারা: শেখ হাসিনা ছাড়া অপর আসামিরা হলেন শেখ হাসিনার সাবেক প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‌্যাবের সাবেক দুই সাবেক মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন ও ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ, সাবেক অতিরিক্ত ডিজি কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, কর্নেল কেএম আজাদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুব আলম, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, লে. কর্ণেল সারওয়ার বিন কাশেম, লে. কর্নেল মুহম্মদ খায়রুল ইসলাম, লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল ও লে. কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন।

দ্বিতীয় অভিযোগে আসামিরা হলেন: শেখ হাসিনা ছাড়া তার প্রতিরক্ষা বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের (ডিজিএফআই) সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব) মো. আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব) মো. সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব) মো. সাইফুল আলম, লে. জেনারেল (অব.) আহমেদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী ও লে. কর্নেল (অব.) মখছুরুল হক। এর মধ্যে চারজন সেনা কর্মকর্তা এখনো কর্মরত রয়েছেন। তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের পর তারা কোনো পদে থাকতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।