৫৪ বছরে ৮ পে স্কেল: কোনটিতে কত শতাংশ বেড়েছিল বেতন?

সরকারি লোগো
সরকারি লোগো © সংগৃহীত

এক দশক পরে গঠিত পে কমিশনের সুপারিশের দিকে তাকিয়ে আছেন কর্মজীবীরা। এবারের পে স্কেলে নতুন বেতন কেমন হবে তাই নিয়েই চলছে আলোচনা। এ বছর বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাধীনতার পর প্রথম গ্রেড ভেঙে কমানো হতে পারে। পাশাপাশি সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত কমিয়ে বৈষম্য কমিয়ে আনার চিন্তাও রয়েছে কমিশনের।

কমিশনের সুপারিশে বেতন কত শতাংশ বৃদ্ধি হতে পারে সেটা নিয়ে চিন্তার ভাজ রয়েছে সরকারি চাকরিজীবীদের। যদিও কমিশনের তরফে মূল বেতন দ্বিগুণ হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে। ইতোপূর্বে দেশে ৮ বার পে কমিশন গঠিত হয়েছে। সবারই ৫০ শতাংশের বেশি বেতন বাড়ানো হয়েছে। তবে এসব ক্ষেত্রে নিচের দিকে থাকা গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির হার ছিল বেশি।

তথ্য পর্যালোচনা করে দেখে যায়, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পে স্কেল প্রণয়ন করা হয় ১৯৭৩ সালে। সে বছর সর্বনিম্ন বেতন ধরা হয় ১৩০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন করা হয় দুই হাজার টাকা। তখন সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত ছিল ১৫.৩৭:১। এর চার বছর পর ১৯৭৭ সালে গঠন করা হয় ২য় পে কমিশন। এই কমিশন সর্বোচ্চ বেতন ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয় তিন হাজার টাকা, অপরদিকে সর্বনিম্ন বেতন ৭৩ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয় ২২৫ টাকা। এ সময় দুই বেতনের অনুপাত কমে হয় ১৩.৩৩।

এর ৮ বছর পর ১৯৮৫ সালে নতুন পে কমিশন গঠিত হয়। এতে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত কমিয়ে করা হয় হয় ১২:১। পাশাপাশি সর্বোচ্চ বেতন দ্বিগুণ করে ৬ হাজার টাকা করা হয়, অপরদিকে সর্বনিম্ন বেতন ১২২.২ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয় ৫০০ টাকা। ৬ বছর পরে গঠিত কমিশন (১৯৯১ সালে) এই বেতন ৮০ শতাংশ বাড়িয়ে ৯০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন ৬৬.৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১০ হাজার করে। এ বছর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত কিছুটা কমে হয় ১১.১১:১।

দেশে ৫ম পে কমিশন প্রণয়ন হয় ১৯৯৭ সালে। আগের কমিশনের ৬ বছর পর গঠিত এই কমিশন সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত ১০:১ এ নামিয়ে আনেন। পাশাপাশি সর্বোচ্চ বেতন ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন বেতন ৬৬.৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয় দেড় হাজার টাকা। এর ৮ বছর পর ২০০৫ সালে গঠিত কমিশন এই বেতন ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে দুই হাজার ৪০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন ৫৩.৩৩ শতাংশ বাড়িয়ে ২৩ হাজার করে। এ বছর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত কিছুটা কমে হয় ৯.৫৮:১।

আরও পড়ুন: টাইমস হায়ার এডুকেশন র‍্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বসেরা ১০ বিশ্ববিদ্যালয়

২০০৯ সালে দেশে সপ্তম পে স্কেল ঘোষিত হয়। চার বছর পর প্রণয়ন করা এই স্কেলে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত কিছুটা বেড়ে হয় ৯.৭:১। পাশাপাশি সর্বোচ্চ বেতন ৭৩.৯১ শতাংশ বাড়িয়ে ৪০ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন বেতন ৭০.৮৩ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয় ৪ হাজার ১০০ টাকা।

অনেক আলোচনা সমালোচনার পর ছয় বছর পর ২০১৫ সালে প্রণয়ন করা হয় ৮ম পে স্কেল। এতে ১০১.২২ শতাংশ বাড়িয়ে করা হয় ৮ হাজার ২৫০ টাকা। আর সর্বোচ্চ বেতন ৯৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৭৮ হাজার করা হয়। এ বছর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৯.৪৫:১।

এখন নবম পে স্কেল নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন সরকারি কর্মজীবীরা। চাকরিজীবীদের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের অনুপাত কমিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন। এক্ষেত্রে অনেকে দাবি তুলেছেন বৈষম্য দূর করতে গ্রেড কমিয়ে বেতনের অনুপাত ১:৪ করা হোক।