গাইবান্ধায় রোগাক্রান্ত গরুর মাংস কাটায় ১১ জন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত, হাসপাতালে ভর্তি ৫

অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ব্যক্তি
অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত ব্যক্তি © টিডিসি

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। একটি রোগাক্রান্ত গরু জবাই করে মাংস কাটাকাটির সঙ্গে জড়িত থাকায় একই গ্রামের ১১ ব্যক্তির দেহে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ শনাক্ত হয়েছে। ইতোমধ্যে এই গ্রুপের ৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, বাকিরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সুন্দরগঞ্জের বেলকা ইউনিয়নের কিশামত সদর গ্রামে গত সোমবার মাহবুর রহমানের রোগাক্রান্ত গরুটি জবাইয়ের চার দিন পর, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, অংশগ্রহণকারী ১১ ব্যক্তির শরীরে অ্যানথ্রাক্সের লক্ষণ দেখা দেয়। তাদের হাত, নাক, মুখ ও চোখে ফোসকা পড়া এবং মাংসে পচন ধরাসহ অন্যান্য উপসর্গ দেখা গেছে।

আক্রান্তদের মধ্যে মোজা মিয়া, মোজাফফর মিয়া, শফিকুল ইসলাম ও মাহবুর রহমানের অবস্থা বেশি খারাপ। তাদের গাইবান্ধার রাবেয়া ক্লিনিক অ্যান্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে।

প্রাণিসম্পদ বিভাগের মতে, পাশের পীরগাছা উপজেলা থেকে অ্যানথ্রাক্স সুন্দরগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে ঘাঘট ও তিস্তা নদীবেষ্টিত এলাকাগুলোতে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু এলাকায় টিকাদান কর্মসূচি চালানো হয়েছে।

উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোজাম্মেল হক জানান, উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় অ্যানথ্রাক্সের প্রকোপ দেখা দিয়েছে এবং তাদের কাছে ১৩ হাজার টিকা মজুদ রয়েছে। তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন যে আক্রান্ত পশুর পরিচর্যা করলে মানুষের মধ্যে রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা দিবাকর বসাক নিশ্চিত করেছেন যে বেলকা ইউনিয়ন থেকে কয়েকজন রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।

এদিকে আক্রান্ত মাহবুর রহমান জানান, তার আরেকটি গরুও প্রায় ১০ দিন আগে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়েছিল। গরুটি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ায় সোমবার তা জবাই করা হয় এবং সেই কাজে যারা অংশ নিয়েছিলেন, তারাই এখন অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. হাফিজার রহমান ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। এলাকায় এ ঘটনা ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।