সেই ১৫ ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ নিয়ে ফারুকের রিটের কারণ তাহলে এই!
- ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০০:২৭
গুঞ্জন ছিল, বিএনপি-ক্রীড়া উপদেষ্টার মধ্যে সমঝোতায় থামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আসন্ন নির্বাচন ঘিরে একের পর এক বিতর্ক। কিন্তু তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন বিএনপিপন্থী প্যানেলের আপত্তিতে নতুন মোড় নেয় বহুল প্রত্যাশিত এই নির্বাচন।
নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের একাধিক সূত্র জানিয়েছিল, ক্যাটাগরি-২ অর্থাৎ ক্লাব ক্যাটাগরিতে ৯:৩ অনুপাতে (বিএনপিপন্থী ৯, সরকারপন্থী ৩ পরিচালক) বোর্ড পরিচালক বণ্টনের মধ্য দিয়ে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। তবে, এতে মূল আপত্তি তুলেন তামিম ইকবাল। সমঝোতার আশায় ক্রীড়া উপদেষ্টার মধ্যস্থতায় যখন আলোচনা চলছিল, তখন হঠাৎ করেই তা ভেঙে যায় তামিমের বক্তব্যে। সাবেক এই অধিনায়ক স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘ভাগাভাগির’ ভিত্তিতে বোর্ডে যেতে রাজি নন তারা, বরং ক্লাব ক্যাটাগরির ১২টি পরিচালক পদই চাই তাদের।
যেখানে ক্রীড়া উপদেষ্টাও ক্ষুব্ধ হন এবং আলোচনায় নতুন মোড় ঘুরে যায়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তামিমের এমন কঠোর অবস্থানের পরই মূলত সমঝোতার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে সভাপতি হিসেবে মানতে রাজি তামিমপন্থীরা। তবে, ঢাকার ক্লাব কোটায় সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদকে বোর্ডে নেওয়ার ব্যাপারে তীব্র আপত্তি তাদের।
অবশ্য, পাল্টাপাল্টি এই অবস্থানে যোগ হয় আরও এক নতুন নাটকীয়তা। গেল সোমবার রাত পার হতে না হতেই, মঙ্গলবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পর্যবেক্ষণে থাকা ১৫টি ক্লাবের কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে আদালতে রিট হয়, ফলে ফের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ে সেসব ক্লাব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, ফারুক আহমেদের নির্বাচন ঠেকাতেই শেষ পর্যন্ত ৯:৩ ফর্মুলা থেকে সরে এসে পুরো ১২টি পদের জন্য পূর্ণ প্যানেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তামিমপন্থীরা। ফলে অনেকের ধারণা, একরকম ক্ষোভ থেকেই ১৫টি ক্লাবে বিপক্ষে রিটটি করেছেন ফারুক। যদিও বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন সাবেক এই সভাপতি।
রিটটি প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে ফারুক বলেছেন, ‘রিটটা এমন এক সময়ে হয়েছে যা দেখে অনেকেই হয়ত ভাবছেন এর সাথে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার একটা সম্পর্ক আছে। মূলত ভোটের লড়াইয়ে জিততেই বুঝি আমি এ রিটটি করেছি!’
সাবেক এই সভাপতির ভাষ্য, ‘আসলে তা নয় একদমই। একটু পিছন ফিরে তাকান। পরিষ্কারভাবে দেখবেন, আমিই এই ১৫ ক্লাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলাম। আমি এই ক্লাবগুলোর বিপক্ষে বরাবরই সোচ্চার ছিলাম। আমি যে অল্প সময় বোর্ড পরিচালনার দায়িত্বে ছিলাম, ওই সময়টায়ই এই ১৫ ক্লাবের বিপক্ষে আমার সুস্পষ্ট অবস্থান ছিল। এবং সে সোচ্চার থাকার যথেষ্ট কারণও ছিল। আমার মনে হয় ওই ক্লাবগুলোর কারণেই আমাদের আম্পায়ারিংয়ের মান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আম্পায়দের মান নষ্ট হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, গত ১০ বছরে প্রায় ৯ হাজার ক্রিকেটারের জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সর্বোপরি ক্রিকেটের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তাই আমি বরাবরই এই লিগটার বিপক্ষে সোচ্চার ছিলাম। তাই আমি মনে করেছি, এ ক্লাবগুলো অবৈধ। এজন্যই রিট করেছি। তার সাথে কেউ অন্য কিছু চিন্তা করলে বা অন্য কিছুর সংযোগের কথা ভাবলে ভুল করবেন। আমি আমার অবস্থানটা ধরে রেখেছি। এরসঙ্গে কৌশলে আইনী মারপ্যাঁচে নির্বাচনে জেতার কোন অভিলাস নেই আমার।’