আমাদের গবেষণা ও উদ্ভাবনগুলো অবশ্যই পেটেন্ট করতে হবে: বাকৃবি উপাচার্য

কর্মশালায় বক্তব্য দিচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া
কর্মশালায় বক্তব্য দিচ্ছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া © টিডিসি

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেছেন, ‘গবেষণার ক্ষেত্রে কোরিয়ার অভিজ্ঞতা অনুসরণযোগ্য। সেখানে সরকার বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে সুফল পাচ্ছে। আমাদের গবেষণা ও উদ্ভাবনগুলো অবশ্যই পেটেন্ট করতে হবে। এর মাধ্যমে গবেষকরা স্বীকৃতি ও আর্থিক সুবিধা পাবেন এবং দেশ উপকৃত হবে।’

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে বাকৃবিতে অনুষ্ঠিত ‘দেশে খাদ্য পুষ্টি সমৃদ্ধকরণের গুরুত্ব’ শীর্ষক একটি ধারণা বিনিময় কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আজকের এই অনুষ্ঠান নিঃসন্দেহে একটি সচেতনতা বৃদ্ধির কর্মশালা। কর্মশালার বিষয়বস্তু অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সচেতনতা থাকা সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণে না রাখার কারণে আমাদের মধ্যে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগ জীবনে জটিলতা সৃষ্টি করছে। যদি আমরা এই বিষয়গুলো বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করি, জাতিকে সচেতন করতে পারি এবং উপযুক্ত গবেষণা করতে পারি, তবে দেশের উন্নতি সাধন হবে।’

তিনি বলেন, শুধু বাকৃবি বা বিনা নয়, ভবিষ্যতে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি প্রতিষ্ঠান ও সিভিল সোসাইটিকে যুক্ত করলে এ কার্যক্রম আরও ফলপ্রসূ হবে। আমরা যে সেন্টার অব এক্সিলেন্স প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছি, সেটি গবেষণা, শিক্ষা ও জাতিকে সচেতন করার ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখবে। এ জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা জরুরি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদীয় কনফারেন্স হলে প্রফেসর মুহাম্মদ হোসেন কেন্দ্রীয় গবেষণাগার (পিএমএইচসিএল) ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশনের (জিএআইএন) যৌথ উদ্যোগে ওই কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শরীফুল হক ভূইয়া এবং জিএআইএনের লিড ড. আশেক মাহফুজ উপস্থিত ছিলেন। পিএমএইচসিএলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আমির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহমুদুল আলম।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলজারুল আজিজ। এ ছাড়া জিএআইএন এর প্রজেক্ট ম্যানেজার মো: আবুল বাসার চৌধুরী এবং জিএআইএন এর লার্জ স্কেল ফুড ফর্টিফিকেশন অ্যান্ড ভ্যালু চেইন এর পোর্টফোলিও লিড ড. আশেক মাহফুজ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। 

কর্মশালায় ফুড ফর্টিফিকেশন সম্পর্কিত একটি সেন্টার স্থাপনের সমীক্ষা যাচাই, বাংলাদেশের জাতীয় ফুড ফর্টিফিকেশনের অংশ হিসেবে কৌশলপত্র প্রণয়ন, খাদ্যমান নিয়ন্ত্রণ ও বাজার তদারকি এবং দেশের চাহিদা অনুযায়ী যুগোপযোগী ফুড ফর্টিফিকেশন কর্মসূচী গ্রহণের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও গবেষণার সুবিধাদি প্রণয়ন প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। একইসাথে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের মোটিভেশনের মাধ্যমে দেশের পুষ্টি সমৃদ্ধ খাদ্য উৎপাদনে অগ্রগামী করার বিষয়েও আলোচনা হয়।

এ কর্মশালায় বাকৃবির সকল অনুষদের শিক্ষকবৃন্দ, বাকৃবির রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো: হেলাল উদ্দিন, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির, অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা অংশগ্রহণ করেন।