ভিন্নধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জামায়াত: নূরুল ইসলাম বুলবুল

ভিন্নধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জামায়াত: নূরুল ইসলাম বুলবুল
ভিন্নধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জামায়াত: নূরুল ইসলাম বুলবুল © সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, অতীতে যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে ছিল, তারা ভিন্নধর্মাবলম্বীদের অধিকার লঙ্ঘন করেছে এবং তাদের সংখ্যালঘু হিসেবে রেখে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী সংখ্যাগরিষ্ঠ কিংবা সংখ্যালঘু নীতিতে বিশ্বাসী নয়। আমাদের নীতিতে প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের কাছে সমান মর্যাদাপূর্ণ। ইসলামী রাষ্ট্রের মৌলিক শিক্ষা হচ্ছে কারো অধিকার হরণ না করা।’

বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর স্বামীবাগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াত আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা-৬ আসনের অন্তর্গত মন্দির ও পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এ সভায় বুলবুল প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও এদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অধিকার ও নিরাপত্তা এখনো পুরোপুরি নিশ্চিত হয়নি। ধর্মীয় উৎসব পালনের সময় উপাসনালয়ে পাহারা দিতে হয়, মন্দির ও প্রতিমা রক্ষায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হয়। এটা প্রমাণ করে যে মানুষের তৈরি মতবাদের মাধ্যমে প্রকৃত ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে ইসলামী সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সবার নিরাপত্তা ও অধিকার সমানভাবে নিশ্চিত করা হবে।’

আরও পড়ুন: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষ পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন

তিনি আরও বলেন, ‘ইসলামী সমাজে প্রত্যেক ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালনে পূর্ণ স্বাধীনতা পাবে। কুরআনের সূরা বাকারাহর ২৫৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই’, আর সূরা নিসার ২৯ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করো না।’ এই আয়াতগুলো ইসলাম ধর্মে ভিন্নধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষার ব্যাপারে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়।’

বুলবুল অভিযোগ করেন, যারা ভিন্নধর্মাবলম্বীদের রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে, তারা ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করে ভয়ভীতি ছড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘৫ আগস্টের পর জামায়াতে ইসলামী স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রম শুরু করতে পারায় দেশ-বিদেশে সব ধর্মের মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি হয়েছে যে, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে ভিন্নধর্মাবলম্বীদের অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে না, বরং তা সুরক্ষিত থাকবে। ফলে জামায়াতের প্রতি মানুষের আস্থা ও সমর্থন বাড়ছে, যা একটি দলের জন্য অস্বস্তিকর হয়ে উঠেছে। এ কারণেই জামায়াতের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তবে এসব অপপ্রচারে আমাদের অগ্রযাত্রা থেমে যাবে না।’

তিনি সব ধর্মের মানুষকে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে একটি ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গঠনের আহ্বান জানান।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা-৬ আসন কমিটির নির্বাচন পরিচালক কামরুল আহসান হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি, ঢাকা-৬ আসনের মনোনীত প্রার্থী ড. আব্দুল মান্নান এবং বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক।

এছাড়াও বিভিন্ন মন্দির ও পূজা কমিটির সভাপতি, সম্পাদকসহ ভিন্নধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দ মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করেন।