জুলাইযোদ্ধা মামুনের গুমে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ সিটিজেন ইনিশিয়েটিভের

নাগরিক সংগঠন সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ
নাগরিক সংগঠন সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ © টিডিসি ফটো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও মাদ্রাসা শিক্ষক মামুন নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নাগরিক সংগঠন সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ। সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মামুনকে খুঁজে বের করা এবং নিরাপদে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া প্রশাসনের সাংবিধানিক দায়িত্ব।

সংগঠনের দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তুরাগ থানার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মামুনকে ২২ সেপ্টেম্বর ভোর থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। স্থানীয়ভাবে মাদ্রাসা পরিচালনার পাশাপাশি তিনি দীর্ঘদিন ধরে উত্তরা ও তুরাগ এলাকায় দখলদারিত্ব ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। জুলাই আন্দোলনেও তিনি সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি মামুন ‘জুলাইযোদ্ধা সিন্ডিকেট’ ও স্থানীয় ছাত্রদের একটি দলের নামে পরিচালিত চাঁদাবাজি ও দখলবাজির বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছিলেন। এর পর থেকেই তিনি প্রকাশ্যে হুমকির মুখে পড়েন। গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতে তাকে ফোনে বলা হয়—‘তোকে গুম করবো।’ কয়েক ঘণ্টা পরই তিনি নিখোঁজ হয়ে যান।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীকে মারধর করে পদ হারালেন বাগছাস নেতা

সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ অভিযোগ করে বলেছে, মামুনের স্ত্রী থানায় সাধারণ ডায়েরি করলেও পুলিশ কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সিসিটিভি ফুটেজে তাকে তুলে নেওয়ার আংশিক দৃশ্য ধরা পড়লেও তা তদন্তে কাজে লাগানো হয়নি। বরং পুলিশ বারবার অসহযোগিতা করেছে। এ ধরনের আচরণ বিগত হাসিনা আমলের র‍্যাব-প্রসুত গুম সংস্কৃতির পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা তৈরি করছে, যেখানে ভুক্তভোগীকে ‘আত্মগোপন’ করার অজুহাত দেখানো হতো।

সংগঠনটির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, একজন নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রশাসনের সাংবিধানিক দায়িত্ব। মামুনের নিখোঁজ হওয়া এবং তাকে উদ্ধারে প্রশাসনের গাফিলতি জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র উপস্থাপন করছে।

সিটিজেন ইনিশিয়েটিভ অবিলম্বে মামুনকে উদ্ধার করে নিরাপদে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। একইসঙ্গে যারা প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে এবং এ ঘটনায় যুক্ত, তাদের গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ ও প্রশাসনিক সংস্থার অসহযোগিতা ও গাফিলতির ব্যাখ্যা জনসমক্ষে দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

সংগঠনটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, রাষ্ট্রের ব্যর্থতায় যদি কোনো নাগরিক গুম বা নিরাপত্তাহীনতার শিকার হয়, তবে এর পূর্ণ দায়ভার প্রশাসনকেই বহন করতে হবে।