শিক্ষকদের বদলি নীতিমালার যে ধারা পরিবর্তন হচ্ছে
- ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:১০
বেসরকারি স্কুল-কলেজে কর্মরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালার ৩.১৬ ধারা পরিবর্তন করতে যাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষকদের দাবির প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে মন্ত্রণালয়।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক কর্মকর্তা আজ বুধবার দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘স্কুল-কলেজের এমপিও নীতিমালার ৩.১৬ ধারায় একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বছরে একজন শিক্ষককে বদলির সুযোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। এটি পরিবর্তনের জন্য শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন। এ দাবির প্রেক্ষিতে এ ধারাটি সংশোধন করা হবে। এটি সংশোধন হলে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে একাধিক শিক্ষক বদলির সুযোগ পাবেন।’
নীতিমালা সংশোধন করতে সময় লাগবে, এর ফলে বদলি কার্যক্রম শুরু করতে অনেক দেরি হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘নীতিমালা সংশোধন করতে খুব বেশি সময় লাগবে না। সময় লাগবে মূলত উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্ত পেতে। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে অনুমতি পেলে সাত কার্যদিবসের মধ্যে নীতিমালা সংশোধন করা সম্ভব।’
বদলি সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্ব
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) একটি সূত্র জানিয়েছে, একটি ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষকদের বদলির সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছিল। কোনো প্রকার দরপত্র ছাড়াই ওই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়। তারা বিনামূল্যে একটি সফটওয়্যার তৈরি করে। সেটির ট্রায়াল হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৪৫টি স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে। এ ট্রায়াল সফলভাবে সম্পন্ন হলেও সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে মাউশির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান যে সফটওয়্যার তৈরি করেছিল সেটি তারা নিজেরাই নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে। তবে আমরা নিয়ন্ত্রণ নিজেদের আওতায় রাখতে চাই। বদলি একটি গোপনীয় বিষয়। এখানে নানা অনিয়ম হওয়ার সুযোগ রয়েছে। বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠানকে এর নিয়ন্ত্রণ দিলে জটিলতা তৈরি হতে পারে। এতগুলো শিক্ষকের তথ্য এভাবে অন্যদের হাতে দিয়ে দেওয়া উচিত হবে। এজন্য আমরা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই সফটওয়্যার নতুন করে তৈরি করব। এজন্য যাবতীয় কার্যক্রম নতুন করে শুরু করা হবে।’
জানা গেছে, এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা নিয়োগ পেলেও দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে থেকে যান, যা শিক্ষকতা পেশার বিকাশে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বদলির সুযোগ চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার। তবে সফটওয়্যারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
শিক্ষকদের অভিযোগ, এ ধরনের দ্বন্দ্ব মূলত প্রশাসনিক অদক্ষতা ও দায়িত্ব পালনের অভাবেরই বহিঃপ্রকাশ। তারা দ্রুত এ কার্যক্রম শুরু করে স্বচ্ছ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে বদলি কার্যক্রম চালুর দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা অনুযায়ী গত ১৫ সেপ্টেম্বরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদের তথ্য অনলাইনে প্রকাশ করার কথা ছিল। তবে নানা জটিলতায় সেই কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর।