শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বিপুল পরিমাণ সিগারেট স্ট্যাম্প জব্দ
- ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬:২০
রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো শাখা থেকে ৯৬ লাখ পিস সিগারেট স্ট্যাম্প ও ২২২ কেজি মোবাইলের এলসিডি জব্দ করেছে ঢাকা কাস্টমস। গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে এগুলো জব্দ করা হয়। ঢাকা কাস্টমস হাউজের যুগ্ম কমিশনার কামরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কাস্টমস সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এয়ারফ্রেইট আমদানি কার্গো শাখায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে দুইটি এয়ারওয়ে বিলের মাধ্যমে বন্ড সুবিধায় গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজের নামে আমদানি করা পেপার লেবেল, গাম টেপ ও লেইসের সঙ্গে ঘোষণা বহির্ভূত সিগারেট স্ট্যাম্প ও মোবাইল ফোনের এলসিডি পাওয়া যায়।
জানা গেছে, গাজীপুরের পূবাইল এলাকার ‘মাহাদী ফ্যাশন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান দুটি এয়ারওয়ে বিলের মাধ্যমে চীন থেকে প্রায় ৩ টন গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ ঘোষণায় পণ্যচালান আমদানি করে। পরবর্তীতে তার মনোনীত সিএন্ডএফ এজেন্ট সিটি এয়ারলাইনস এসব আমদানির বিপরীতে পণ্য ঘোষণা দাখিল করে। কিন্তু আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ও সিএন্ডএফ এজেন্ট এয়ারওয়ে বিলের মাধ্যমে ঘোষিত পণ্যের সঙ্গে ঘোষণাবহির্ভূত আমদানি নিষিদ্ধ সিগারেট স্ট্যাম্প এবং মোবাইল ফোনের এলসিডি খালাসের চেষ্টা করে। আটক পণ্য খালাস হয়ে সিগারেট সরবরাহে ব্যবহৃত হলে সরকারের আনুমানিক প্রায় ৫৪ কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হত।
কাস্টমস জানিয়েছে, জব্দকৃত পণ্য বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং আমদানিকারক ও সিএন্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্র দীর্ঘদিন ধরে গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজের আড়ালে নিষিদ্ধ ও উচ্চমূল্যের পণ্য দেশে আনার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে তারা হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এই চক্রের বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, বিদেশি সংযোগ এবং কারা স্থানীয়ভাবে সহায়তা দিচ্ছে তা খতিয়ে দেখা উচিত।
কাস্টমস হাউসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, আমরা গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিলাম যে সাম্প্রতিক কিছু কনসাইনমেন্টে ঘোষণার বাইরে উচ্চ শুল্কের ও নিষিদ্ধ পণ্য আনার চেষ্টা চলছে। সে কারণেই বিশেষ নজরদারি চালাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, এর সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্র জড়িত। এ ধরনের অপরাধ ঠেকাতে এয়ারফ্রেইট শাখায় নজরদারি আরও জোরদার করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সিগারেট স্ট্যাম্প জব্দ হওয়া শুধু রাজস্ব ক্ষতির ঝুঁকি নয়, বরং এটি তামাকশিল্পে অবৈধ প্রতিযোগিতা ও জনস্বাস্থ্যের জন্যও গুরুতর হুমকি। কারণ অবৈধভাবে বাজারে প্রবেশ করা সিগারেট সরকারের নির্ধারিত দাম ও কর ব্যবস্থার বাইরে বিক্রি হয়, যা একদিকে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি করে এবং অন্যদিকে সাধারণ ভোক্তারা প্রতারণার শিকার হয়।