বিশ্বের ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় পাবিপ্রবির চার শিক্ষক

পাবিপ্রবির চার শিক্ষক
পাবিপ্রবির চার শিক্ষক © সংগৃহীত

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ৪ জন শিক্ষক বিশ্বের সেরা ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় স্থান পেয়েছেন। গত শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞান ও চিকিৎসাবিষয়ক প্রকাশনা সংস্থা ‘এলসেভিয়ার’ এর যৌথ গবেষণায় ভিত্তি করে এ তালিকা প্রকাশ করা হয়।

তালিকাটি গবেষকদের বৈজ্ঞানিক প্রকাশনা, এইচ-ইনডেক্স, সাইটেশন সংখ্যা ও অন্যান্য গবেষণা সূচকের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়ে থাকে। 

তালিকায় স্থান পাওয়া গবেষকরা হলেন ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শেখ রাসেল আল আহমেদ, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. নূর আলম, সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. একরামুল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক এস এম রাইহানুল ইসলাম।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ গবেষকের তালিকায় এ বছর বাংলাদেশ থেকে ৭১টি প্রতিষ্ঠানের মোট ২৮৬ জন গবেষক স্থান পেয়েছেন। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক প্রকাশনা সংস্থা ‘এলসেভিয়ার’ প্রতিবছর দুই হাজারের বেশি জার্নাল প্রকাশ করে। প্রকাশিত জার্নালে নিবন্ধের সংখ্যা ২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি। এর আর্কাইভে ৭০ লাখের বেশি প্রকাশনা রয়েছে।

অধ্যাপক ড. শেখ রাসেল আল আহমেদ বলেন, আসলে এই তালিকায় দুটি ধাপে সেরা গবেষক নির্ধারণ করা হয়। এর একটি হল পুরো পেশাগত জীবনের ওপর। আরেকটি শুধু এক বছরের গবেষণা কর্মের ওপর। বিজ্ঞানীদের প্রকাশনার মান, এইচ-ইনডেক্স, সাইটেশন ও অন্যান্য সূচক বিশ্লেষণ করে তালিকাটি প্রস্তুত করা হয়। ২২টি বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র এবং ১৭৪টি উপক্ষেত্র বিবেচনা করে স্ট্যান্ডার্ড সায়েন্স-মেট্রিক্স শ্রেণি বিভাগ অনুযায়ী এ বছর মোট ২ লাখ ৩৬ হাজার ৩১৪ জন গবেষককে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: আগের ফাইল বাদ, তিন দপ্তরের বাড়ি ভাড়ার প্রস্তাব একসঙ্গে পাঠাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গবেষণার মূল ক্ষেত্র হলো সোলার সেল। আমরা সোলার সেলকে মূলত মেশিন লার্নিং প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্লেষণ ও উন্নয়ন করার চেষ্টা করছি। আমাদের লক্ষ্য হলো সোলার সেলের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করা। প্রথম ধাপে আমরা সোলার সেলের বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা শনাক্ত করেছি, যেখানে বিশেষ করে সিলিকন সোলার সেলের বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা পাওয়া গেছে। এসব চ্যালেঞ্জিং সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা বিভিন্ন ম্যাটারিয়াল ব্যবহার করে নতুন স্ট্রাকচার তৈরির প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’

অধ্যাপক ড. মো. নূর আলম বলেছেন, ‘২০২৫ সালে পুনরায় বিশ্বের শীর্ষ ২ শতাংশ বিজ্ঞানীদের তালিকায় স্থান পেয়ে আমি গভীরভাবে সম্মানিত। টানা চার বছর এ স্বীকৃতি অর্জন কেবল আমার ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশের গবেষণা ও একাডেমিক উৎকর্ষেরও এক উজ্জ্বল স্বীকৃতি। আমি সর্বদা চেষ্টা করছি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের দরবারে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে। বিশেষ করে গণিত বিভাগের গবেষণা ও একাডেমিক কার্যক্রমকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে আমি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় টানা চারবার বিশ্বের শীর্ষ গবেষক তালিকায় আমার নাম অন্তর্ভুক্ত হওয়া সম্ভব হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগ্য ও মেধাবী শিক্ষকদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হলে এবং তাঁদের যোগ্যতার ভিত্তিতে দায়িত্ব প্রদান করা হলে, আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা ও শিক্ষায় বিশ্ব অঙ্গনে গৌরবের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশও একদিন গবেষণা ও উচ্চশিক্ষায় বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে মর্যাদার আসন লাভ করবে,এ প্রত্যাশাই আমি করি। আমি তারই একটি জীবন্ত উদাহরণ।’