আইইএলটিএস পরীক্ষা নিয়ে সন্দেহ হলে যেসব শাস্তি দেওয়া হয়
- ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০৩
আন্তর্জাতিক ইংরেজি ভাষা দক্ষতা পরীক্ষা আইইএলটিএসে (IELTS) কোনো ধরনের সন্দেহজনক কার্যকলাপ, প্রতারণা বা পরীক্ষার নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরীক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। এসব বিধান পরীক্ষার পূর্বশর্ত হিসেবে পরীক্ষার্থীকে মেনে নিতে হয় এবং এসব শর্ত লঙ্ঘন করলে তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফল বাতিলসহ বিভিন্ন শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়।
আইইএলটিএস টেস্ট পার্টনারদের নীতিমালায় বলা হয়েছে, পরীক্ষার আবেদনপত্রে দেওয়া তথ্য যদি অসম্পূর্ণ, মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর হয়, তবে আবেদন বাতিল করা হতে পারে। আবার পরীক্ষার সময় বা পরীক্ষার প্রশাসনে কোনো অনিয়ম শনাক্ত হলে সংশ্লিষ্ট ফলাফল সাময়িক বা স্থায়ীভাবে আটকে রাখা হতে পারে। প্রয়োজনে সম্পূর্ণ ফলাফল বাতিলও করা যেতে পারে। এছাড়াও পরীক্ষার্থীকে ৫ বছরের জন্য বহিষ্কারও করা হতে পারে।
সন্দেহজনক কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে পরীক্ষার্থীদের থেকে আলাদাভাবে ব্যাখ্যা চাওয়া হতে পারে। কেউ যদি পরীক্ষার নিয়ম ভঙ্গ করেন বা আইইএলটিএসের নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নষ্ট হয় এমন কিছু করেন, তাহলে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে না, পরীক্ষার ফি ফেরত দেওয়া হবে না এবং ভবিষ্যতে এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হতে পারে। এমনকি পরীক্ষার অংশ বিশেষ পুনরায় দিতে হতে পারে।
আরও পড়ুন: প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের পর আইইএলটিএসের ফলাফল স্থগিত
আরও যেসব কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে পারেন পরীক্ষার্থী-
পরীক্ষা জালিয়াতি বা প্রশ্ন ফাঁসসহ কোনো রকম প্রতারণার প্রমাণ মিললে, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষ বা ভিসা সংস্থার কাছে সেই তথ্য, পরীক্ষার্থীর ছবি, ফলাফল, এমনকি পরীক্ষার স্ক্রিপ্ট পর্যন্ত হস্তান্তর করা যেতে পারে। পরীক্ষার যেকোনো অংশ অন্য কেউ দিলে, উভয় পক্ষকেই আইনি ব্যবস্থার সম্মুখীন করা হতে পারে। এমনকি এ বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছেও বিষয়টি জানানো হবে।
পরীক্ষার সময় পরীক্ষার্থীর ছবি ও ভিডিও রেকর্ড করা হয়ে থাকে। আইডি যাচাইয়ের সময় বা পরীক্ষার দিন এই ফুটেজ নেওয়া হয় এবং তা ৬০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হয়। এই ভিডিও ফুটেজও তদন্ত ও নিরীক্ষার কাজে ব্যবহৃত হতে পারে।
এছাড়া আইইএলটিএস স্পিকিং টেস্ট অনলাইন প্ল্যাটফর্মে (যেমন Zoom) নেওয়া হলে সেটিও রেকর্ড করা হয়। রেকর্ড ব্যর্থ হলে আবারও টেস্ট দিতে হতে পারে। পরীক্ষার প্রতিটি কাজ এবং উপস্থাপন আইইএলটিএস টেস্ট পার্টনারদের মালিকানাধীন বলে বিবেচিত হয় এবং তা পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করা হয় না।
আরও পড়ুন : আইইএলটিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ২
তদন্তে প্রমাণিত হলে পরীক্ষার্থীকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়। কেউ নিষিদ্ধ থাকা অবস্থায় আবার পরীক্ষা দিতে চাইলে ফলাফল দেওয়া হবে না এবং ফি ফেরতও পাওয়া যাবে না।
পরীক্ষার ফি ফেরতের ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ রয়েছে। কেউ আবেদন বাতিল করলে বা তারিখ পরিবর্তন করতে চাইলে স্থানীয় আইন অনুযায়ী তা বিবেচনা করা হয়। আবার পরীক্ষার জন্য কোনো অর্থায়ন নিষিদ্ধ ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠানো হলে ব্রিটিশ কাউন্সিল সেই অর্থ আটকে রাখতে পারে এবং নির্ধারিত সেবা প্রদান করবে না।
সবশেষে, আইইএলটিএস টেস্ট পার্টনাররা সকল পরীক্ষার্থীর তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষা করলেও প্রয়োজনে আইনি বা নীতিগত কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তা প্রকাশ করতে পারে। পরীক্ষার সুষ্ঠুতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষার্থে এসব কঠোর নিয়ম অনুসরণ করা হয় বলেও কর্তৃপক্ষ জানায়।