রোমাঞ্চকর জয় বাংলাদেশের, সুপার ফোরের হাতছানি
- ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:১০
এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে রীতিমতো পরীক্ষার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল বাংলাদেশ। তবে সমীকরণ ছিল একদমই সহজ; হার মানেই বিদায়, জয় মানেই সুপার ফোরের স্বপ্ন জিইয়ে থাকবে। যদিও সেই বাস্তবতায় রক্ষণাত্মক মনোভাবই দেখা যায়। একাদশে একজন কম রেগুলার বোলার রেখেছিল টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট।
ফলাফল, মিডল ওভারে বোলিংয়ে ছন্দপতন, রানরেট নিয়ন্ত্রণে না থাকা, আর ফিনিশিংয়ে ধারহীনতা—সব মিলিয়ে ম্যাচ আফগানিস্তানের নাগালেই ছিল। কিন্তু শেষদিকে স্মার্ট বোলিংয়ে লড়াইয়ে ফেরে বাংলাদেশ। স্বস্তির জয়-ও শেষমেশ এসেছে। এই জয়ে সুপার ফোরের আশাও টিকে থাকলো লিটন বাহিনীর।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আবু ধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। জবাবে ১৪৬ রানে থামে আফগানদের ইনিংস। এই জয়ে টেবিলের দুইয়ে উঠল লিটন দাসের দল।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে প্রথম ওভারে নাসুম আহমেদের করা প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ হন সেদিকউল্লাহ। পরের ওভারে ইব্রাহিম জাদরানের সহজ ক্যাচ ফেললেও অবশ্য পরে তাকেও ফেরান নাসুম। পাওয়ার প্লেতে আফগানিস্তান ২ উইকেটে তোলে মাত্র ২৭ রান।
এরপর গুরবাজ-নাইব কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও রানের গতি বাড়াতে পারেননি। রিশাদ ফেরান দুজনকেই। দলীয় ফিফটির পর রিশাদের বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে আউট হন ১৪ বলে ১৬ রান করা নাইব। অন্যপ্রান্তে দুটি করে চার-ছক্কায় গুলবাজের ব্যাট থেকে আসে ৩১ বলে ৩৫ রান।
নবিও মোটেই সুবিধা করতে পারেননি, মুস্তাফিজের বলে বোল্ড হন। ফেরার আগে ১৫ বলে ১৫ রান করেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।
সেখান থেকে আফগানদের সম্ভাবনার নাম হয়ে ওঠেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। সাইফ হাসানের ওভারে ছক্কা-চারে সমীকরণ সহজ করে আনেন। পরে তাসকিনের বলেও ছক্কা মারেন। তবে পরের বলেই বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন ১৬ বলে ৩০ রানে, যা ম্যাচের টার্নিং পয়েন্টও।
শেষদিকে রশিদ খানও ঝড় তোলেন। কিন্তু মোস্তাফিজ ও নাসুমের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে রাখে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে ২২ রানের সমীকরণে দুটি ছক্কা মেরে দেন নুর আহমেদ। কিন্তু তাসকিনের ঠান্ডা মাথার বোলিংয়ে ৮ রানে জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে দুর্দান্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে’তে কোনো উইকেট না হারিয়ে সবশেষ ১২ ম্যাচের মধ্যে রেকর্ড উদ্ভোধনী জুটি গড়ে টাইগাররা। তবে ইনিংসের সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলেই আফগান শিবিরে স্বস্তি ফেরান রশিদ খান। আফগান অধিনায়ককে স্লগ করতে গিয়ে লাইন মিস করেন সাইফ। বোল্ড হয়ে ২৮ বলে ৩০ রানে ফেরেন এই ওপেনার।
এরপর দুই অঙ্কের কোটা পেরোনোর আগেই ফেরেন লিটন দাস (১১ বলে ৯)। নিজের প্রথম বলেই বাংলাদেশ অধিনায়ককে ফেরান নুর আহমেদ। রিভিউ নিয়ে তাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান এই রিস্ট স্পিনার।
ইনিংসের ১২তম ওভারে ফিফটি ছুঁয়ে পরের ওভারে ২ রান নিতে গিয়ে প্যাভিলিয়নের পথে ধরেন তামিম। মূলত নুর আহমেদকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অফে ইব্রাহিম জাদরানের মুঠোবন্দি হন ৩১ বলে ৫২ রান করা এই ওপেনার।
এর আগে, অবশ্য চলতি বছরে চর্তুথ ফিফটির দেখা পেয়ে যান তামিম। এই ফরম্যাটে এক পঞ্জিকাবর্ষে বাংলাদেশের ব্যাটারদের যৌথ রেকর্ড এটি। ২০২২ ও এ বছরই লিটন দাসও চারবার পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন।
এরপর শামীম পাটোয়ারীও আস্থার নাম হয়ে উঠতে পারেননি। ধীরগতির এক ইনিংসে দুই অঙ্ক পেরিয়েই ফেরেন এই অলরাউন্ডার। রশিদের স্পিন বিষে এলবিডব্লু’র ফাঁদে পরার আগে ১১ বলে ১১ রান করেন শামীম।
এছাড়াও জাকের ১৩ বলে ১২ ও সোহান ৬ বলে ১২ রানের হার না মানা ইনিংস খেললে লড়াইয়ের পুঁজি পায় বাংলাদেশ।