দুর্গাপূজা শুরু ২১ সেপ্টেম্বর, রং তুলিতে ব্যস্ত প্রতিমা শিল্পীরা

শিল্পীদের নিপুণ হাতে ধীরে ধীরে পূর্ণতা পাচ্ছে দেবী দুর্গা ও অন্যান্য দেব-দেবী
শিল্পীদের নিপুণ হাতে ধীরে ধীরে পূর্ণতা পাচ্ছে দেবী দুর্গা ও অন্যান্য দেব-দেবী © সংগৃহীত

২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ উৎসবকে ঘিরে ইতোমধ্যেই যশোর জেলার প্রতিটি মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শিল্পীদের নিপুণ হাতে ধীরে ধীরে পূর্ণতা পাচ্ছে দেবী দুর্গা ও অন্যান্য দেব-দেবীদের প্রতিমা। অনেক জায়গায় প্রতিমা তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শেষ হলেও, এখনো বাকি রয়েছে রঙ-তুলির চূড়ান্ত পরশ। 

জানা গেছে, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মাধ্যমে শুরু হবে দুর্গোৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী পূজা দিয়ে শুরু হয়ে ২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে শেষ হবে দেবী দুর্গার আরাধনা। আয়োজকদের বিশ্বাস, এবারও উৎসব হবে শান্তিপূর্ণ এবং মহাআনন্দের।

রং তুলিতে শিল্পীদের ব্যস্ততা এখন চরমে। খড়, কাদা আর মাটির নিপুণ কাজে প্রতিমার অবয়ব গড়ে তুলছেন তারা। এরপর রঙ তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলবেন দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক ও গণেশের সৌন্দর্য। এবার দেবী দুর্গা গজে (হাতি) চড়ে কৈলাশ থেকে আসবেন এবং দোলায় (পালকি) ফিরে যাবেন, যা শুভ এবং শান্তির প্রতীক বলে মনে করেন সনাতন ধর্মীয় অনুসারীরা।

যশোরের প্রতিমা শিল্পী প্রদীপ পাল জানান, প্রতি বছর দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে প্রচন্ড ব্যস্ত থাকেন তিনি। প্রতিমা বানানোর জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে তার কাছে অডার আসে। নির্ধারিত সময়ে প্রতিমা তৈরি করতে দিন রাত পরিশ্রম করতে হয় তাকে। পরিশ্রম অনুযায়ী তেমন টাকা পান না তিনি। তবুও বাপ-দাদার পুরাতন পেশা ধরে রাখতে তিনি এই কাজ করে চলেছেন। তবে, প্রতিমা তৈরির ব্যয় বৃদ্ধি বেড়েছে, পারিশ্রমিক খুব একটা বাড়েনি বলে আক্ষেপও প্রকাশ করেন তিনি। ৫০ টি মন্দিরের প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন তিনি।

প্রতিমা শিল্পী শংকর মন্ডল জানান, তিনি বেজপাড়া পুজোর মাঠে প্রতিমা তৈরীর কাজ করছেন। ৩৯ টি প্রতিমা তৈরি করেছেন। এখন রং তুলির কাজ চলছে। নড়াইল, যশোর, ঝিনাইদহ ও মেহেরপুরের বিভিন্ন মন্দিরের দুর্গা প্রতিমা তৈরীর কাজ পেয়েছেন। অধিকংশ কাজ  শেষের পথে। রং তুলির কাজ চলছে এখন।

বেজপাড়া পূজা মন্দিরের পুরোহিত নরেন্দ্র নারায়ন চক্রবর্তী বলেন, এবার দেবী দুর্গা গজে (হাতি) চড়ে কৈলাশ থেকে আসবেন এবং দোলায় (পালকি) ফিরে যাবেন, যা শুভ এবং শান্তির প্রতীক বলে মনে করেন তিনি। উৎসবের সাথে পূজা করতে চান তিনি। প্রতি বছর দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে বিভিন্ন প্রবাকান্ড রটে। এতে ধর্মপ্রাণ হিন্দুদের মধ্যে ভয়ের সঞ্চর হয়। এসব প্রবাকান্ড যেন কেউ রটাতে পারে সেই সবাইকে সর্তক থাকতে হবে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তপন ঘোষ বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই জেলায় সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের সহযোগিতায় এবারও আনন্দমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থাও গ্রহণ করা হয়েছে।’

যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইরুফা ইয়াসমিন বলেন, জেলার আটট উপজেলায় বিভিন্ন মন্দিরে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন থাকবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালনের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে । আশা করছি, কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।