‘আমি সবসময় তোমাদের পাশে আছি’—খোলা চিঠিতে শিক্ষার্থীদের ড্যাফোডিল উপাচার্য
- ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮:১৯
বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. আর. কবির। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে ইমেইলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একটি খোলা চিঠি পাঠানো হয়।
চিঠিতে উপাচার্য বলেন, প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, আসসালামু আলাইকুম। তোমরা ইতোমধ্যেই জান যে, গত ১১ জুলাই আমি তোমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। উপাচার্য হিসেবে তোমাদের উদ্দেশ্যে এটি আমার প্রথম চিঠি। আজকের পৃথিবী বিশেষ করে আমাদের এ অঞ্চলে বিভিন্ন মাত্রার অস্থিরতা বিরাজমান। এমন সময়ে আমাদের সবারই উচিত ধৈর্য ধরে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে জীবনের সঠিক দিক খুঁজে বের করা। তোমাদের পিতা-মাতা অনেক আশা নিয়ে তোমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছেন। তাদের প্রধানতম আশা, জ্ঞানার্জন করে যেন তোমরা আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারো। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই তোমাদের পাশে সর্বদা রয়েছেন আমাদের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।
তিনি বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আমি চেষ্টা করছি এই স্বপ্ন পূরণের পথকে আরও সহজ ও সুন্দর করে তুলতে। সেই লক্ষ্যেই আমরা শুরু করেছি ‘Daffodil Delight – Smile. Serve. Bloom’ স্লোগানভিত্তিক ‘সেবার উৎকর্ষতা বৃদ্ধি’ কর্মসূচি। এর মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক সেবার মান উন্নত করা এবং তোমাদের অভিজ্ঞতাকে আরও আনন্দময় করা। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সেবা অফিসে কিউআর কোড স্থাপন করা হয়েছে, যাতে তোমরা খুব সহজে মতামত ও প্রতিক্রিয়া জানাতে পারো। তোমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণই আমাদের এই প্রচেষ্টাকে সফল ও অর্থবহ করে তুলবে। এ ছাড়াও তোমাদের, তোমাদের বন্ধু বা অভিভাবকদের কোনো বিষয়ে মতামত, অভিযোগ বা পরামর্শ থাকলে তোমরা নিজ নিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানকে জানাবে। আমি নিয়মিতভাবে বিভাগীয় প্রধানদের কাছ থেকে এসব বিষয় শুনবো এবং সমাধানের জন্য নিরন্তর কাজ করে যাবো, ইনশাআল্লাহ।’
অধ্যাপক ড. এম. আর. কবির বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আমাদের এই বৃহৎ পরিবারে যেমন রয়েছে অনেক সাফল্য, তেমনি সাময়িক কিছু সমস্যা দেখা দিতেও পারে। আর আন্তরিকতা ও সহযোগিতার মাধ্যমে সবকিছুই সমাধানযোগ্য। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও সুনাম গড়ে উঠবে প্রাক্তন, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে। তাই আমরা যেন কখনো অযথা নেতিবাচক সমালোচনার মাধ্যমে নিজেদের বা আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ছোট না করি, এটাই সবার কাছে আমার প্রত্যাশা।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ইতিবাচক মানসিকতার কারণেই তোমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হবার যোগ্যতা অর্জন করেছো। তোমাদের মঙ্গলের জন্যই বিভাগীয় প্রধান, হল প্রভোস্ট, কোর্স শিক্ষক, মেন্টরসহ নানা ধরণের সহায়তার ব্যবস্থা রয়েছে। সবশেষে আবারও বলি, যেকোনো প্রয়োজনে, অভাবে বা অভিযোগে প্রথমে বিভাগীয় প্রধানের সাথে যোগাযোগ করবে। যদি সেখানে সমাধান না পাও, তবে ডিন মহোদয়ের কাছে যাবে। আশা করি সেখানেই সমাধান পাবে। তবুও যদি কোনো কারণে সমাধান সম্ভব না হয়, তবে জেনে রেখো, আমি সবসময় তোমাদের পাশে আছি। সবার জন্য রইল আমার আন্তরিক মঙ্গলকামনা।’
উল্লেখ্য, গত কিছুদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সমস্যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সরব ছিলেন। সমস্যাগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সরাসরি না বলে এসব মাধ্যমে দেওয়ায় সমস্যার সমাধান হচ্ছে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সেই উদ্দেশ্যেই ড্যাফোডিল উপাচার্যের এই খোলা চিঠি।