অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গে দুজনের মৃত্যু, আক্রান্ত অন্তত ৫০

অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গ
অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গ © সংগৃহীত

রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স রোগের উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এই দুইজনের মৃত্যুর পেছনে অ্যানথ্রাক্স সরাসরি দায়ী কি না, তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এতে আক্রান্ত হয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক মানুষ। ইতিমধ্যে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

মারা যাওয়া দুইজন হলেন—পীরগাছা ইউনিয়নের তালুক ইসাদ গ্রামের আবদুর রাজ্জাক (৪৫) এবং পারুল ইউনিয়নের আনন্দী ধনীরাম গ্রামের কমলা বেগম (৬০)। 

রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকার আইইডিসিআর-এর একটি চার সদস্যের প্রতিনিধি দল রাজ্জাকের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের কাছ থেকে তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করে। এরপর তারা যান নগরজিৎপুর গ্রামে।

দুপুর ১২টার দিকে নগরজিৎপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, খলিলুর রহমানের বাড়িতে সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করছে দলটি। সেখানে উপস্থিত সালেদা খাতুন জানান, ৬ সেপ্টেম্বর খলিলুরের বাড়িতে একটি অসুস্থ গরু জবাই করা হয়। সেই মাংস খাটতে গিয়ে খলিলুরের পরিবারের চারজনসহ অন্তত দশজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে নয়জন এখন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

আইইডিসিআরের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. আবদুল্লাহ জানান, তারা আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করছেন, এবং এ প্রক্রিয়া শেষ হতে আরও তিন-চার দিন সময় লাগবে। ঢাকায় ফিরে এসব নমুনা ল্যাবে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া যাবে রোগের প্রকৃতি।

এদিকে, পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ তানভীর হাসনাত বলেন, মাসখানেক আগে গবাদিপশুর মধ্যে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দেয় এবং অনেক পশু মারা যায়। পরে প্রাণিসম্পদ বিভাগ তাদের পাঠানো নমুনা পরীক্ষা করে গত সপ্তাহে নিশ্চিত করে, মৃত পশুর মাংসে অ্যানথ্রাক্সের জীবাণু ছিল।

তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত ১০ থেকে ১২ জন রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যানথ্রাক্সের চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে পীরগাছা সদর ও পারুল ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অন্তত ৫০ জন মানুষের শরীরে এই রোগের উপসর্গ দেখা দিয়েছে।

এ ছাড়া গত দুই মাসে গবাদিপশুর মৃত্যুর পরিসংখ্যানে আরও ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। জানা গেছে, অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়ে তিন শতাধিক গরু মারা গেছে। এ অবস্থায় রোগটি ছড়িয়ে পড়া রোধে প্রশাসনের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগকে জরুরি ব্যবস্থা নিতে বলছেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করার দাবি জানানো হয়েছে।