ডাকসু: ছাত্রীদের পছন্দ ‘ম্যাচিউরড ক্যান্ডিডেট’

ছাত্রীদের ৫ হল
ছাত্রীদের ৫ হল © টিডিসি সম্পাদিত

ঘনিয়ে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট এমনকি স্যোশাল মিডিয়া-মূলধারার মিডিয়ার খবর, নির্বাচনে এ বছর বড় ফ্যাক্টর হবে নারী শিক্ষার্থীদের ভোট। এর পক্ষে যুক্তি হিসেবে তারা বলছেন, নির্বাচনে প্রায় অর্ধেক ভোটার নারী; তারাই নির্বাচনে ব্যবধান গড়ে দেবেন। এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, নারী ভোটারদের পছন্দের তালিকায় কেমন প্রার্থী? বিষয়টি জানতে বেশ কয়েকটি হল ও বাইরে থাকা ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস। তারা জানিয়েছেন, ডাকসু রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম; সে হিসেবে নির্বাচনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতারাই সব সময় প্রাধান্য পেত। তবে ৫ আগস্ট পরবর্তী রাজনীতি এবং জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা যেহেতু গতানুগতিক রাজনীতিকে সমর্থন করে না; তাই এ বছর রাজনীতির বাইরেও ব্যক্তির যোগ্যতা-দক্ষতা-স্মার্টনেস-ব্যাকগ্রাউন্ডগুলো বেশি প্রাধান্য পাবে। 

ছাত্রীরা এ-ও বলছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ মধ্যবিত্ত পরিবারের। তাদের কাছে রাজনীতি ম্যাটার করার চেয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অধিকারই মুখ্য; যা বিগত ফ্যাসিবাদের আমলে ছাত্রলীগ কেড়ে নিয়েছিল। এসব অধিকারের মধ্যে আবাসিক হিসেবে হলে সিট, ক্যান্টিনের খাবরের মান ও রিডিং রুমে পড়ার সুব্যবস্থা। সুতরাং তাদের চাওয়া, নতুন সুযোগ-সুবিধা নয়, বরং প্রাপ্য অধিকার যেন কেউ কেড়ে না নেয়- এমন প্রার্থীরা। সেক্ষেত্রে রাজনীতির বাইরে ম্যাচিউরড, স্মার্ট ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন কাউকেই তারা বেছে নেবেন।

এদিকে, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে রাজনীতির ধরনের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটলেও এখনো শিক্ষার্থীদের কাছে এই ‘গণরুম’ ও ‘গেস্টরুম’ এক আতঙ্কের নাম। তাদের দাবি- থাকা, খাওয়া এবং পড়াশোনার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করাই হোক ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের মূল অঙ্গীকার এবং তা নির্বাচনের পর রূপ নিক বাস্তবতায়। কারণ, একজন শিক্ষার্থী যদি প্রথম বর্ষ থেকে হলে বৈধ সিট পায়, তাহলে এই ‘গণরুম-গেস্টরুম’ কালচার থাকার সম্ভাবনা কম।

ফারজানা আক্তার নামে ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমার প্রথম প্রায়োরিটি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নন এমন কেউ। এছাড়া যারা শিক্ষা ও গবেষণার সাথে যুক্ত তাদেরকে আমি ভোট দেব। এছাড়া প্রার্থী সিলেকশনের ক্ষেত্রে আমি প্রার্থীদের ব্যাকগ্রাউন্ডের দিকেও নজর দিচ্ছি। 

আনিকা নামে পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি চেষ্টা করছি সব প্রার্থীদের ইশতেহার পড়ে দেখার। আমার চিন্তা-ভাবনার প্রতিফলন  যাদের ইশতেহারের সাথে মিলবে আমি তাদেরকে ভোট দেব। একইসঙ্গে প্রার্থীরা কে কীভাবে প্রচারণা চালাচ্ছেন, তাদের কথা বলার ধরন কেমন, ভোট চাওয়ার অ্যাপ্রোচ কেমন, জুলাই আন্দোলনে তাদের ভূমিকা কী ছিল—এই সব বিষয় মাথায় রেখে আমি প্রার্থী নির্বাচন করছি।  

ইশরাত মুন্নি নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, মেধাবী এবং ম্যাচিউরড প্রার্থী আমার পছন্দের শীর্ষে। এছাড়া  নারীদের নিরাপত্তা, সাইবার বুলিং থেকে নারীদের রক্ষা, স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করতে পারবে এমন প্রার্থী আমি সিলেক্ট করছি।

সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থী ডালিয়া কানিজ চৈতী বলেন, আমার সেই প্রার্থীকেই পছন্দ যার পারসোনালিটি, ম্যাচিউরিটি, রেসপন্সিবিলিটি আছে এবং যে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের ক‌থাই ভাববে এবং সেই অনুযায়ী কাজ করবে। নাঈমা নামে চারুকলা অনুষদের এক শিক্ষার্থী বলেন, গুড লুকিং, স্মার্ট, ভালো কথা বলতে পারে এমন প্রার্থী আমার পছন্দ। 

উল্লেখ্য, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ডাকসু নির্বাচন। ৮টি কেন্দ্রে এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।