উন্নত কৃষি বিপণন ব্যবস্থা ছাড়া কৃষকের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়: গাকৃবি ভিসি
- ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:০৪
গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গাকৃবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, “উন্নত কৃষি বিপণন ব্যবস্থা ছাড়া কৃষকের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। এ ধরনের গবেষণা কার্যক্রম আমাদের বাস্তব ভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়নে সহায়ক হবে। বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় এমন গবেষণাকে উৎসাহিত করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।”
আজ রবিবার “বাংলাদেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনকারীদের উন্নয়নে শস্য গুদাম ঋণদান প্রকল্প এর প্রভাব” শীর্ষক কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।বাংলাদেশ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় কর্মশালাটি আজ রবিবার সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রজেক্ট ডিরেক্টর (মডার্নাইজেশন এন্ড ডিজিটাইজেশন) ড. ফাতেমা ওয়াদুদ। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শফি উল্লাহ মজুমদার এবং কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডেপুটি সেক্রেটারি) ড. মোঃ রফিকুল ইসলাম।
কর্মশালার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক ছিলেন গাকৃবির ট্রেজারার এবং উক্ত গবেষণা প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মোঃ সফিউল ইসলাম আফ্রাদ। কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনকারীদের উন্নয়নে শস্য গুদাম ঋণদান প্রকল্প, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দসহ গাকৃবির বিভিন্ন অনুষদের ডিন, পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ
কর্মশালার শুরুতে ড. আফ্রাদ স্বাগত বক্তব্য এবং মূল প্রবন্ধের প্রাণবন্ত উপস্থাপনা তুলে ধরেন। তাঁর উপস্থাপিত প্রবন্ধে বাংলাদেশের ধান উৎপাদক কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থান, বাজার প্রবেশাধিকার এবং বাংলাদেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনকারীদের উন্নয়নে শস্য গুদাম ঋণদান প্রকল্প মডেলের প্রয়োগে সম্ভাব্য সুফল নিয়ে বিস্তারিত বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়। তিনি মূল প্রবন্ধে বলেন, বাংলাদেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনকারীদের উন্নয়নে শস্য গুদাম ঋণদান প্রকল্প বিপণন কৌশল একটি অংশগ্রহণমূলক ও কৃষক- কেন্দ্রিক পদ্ধতি, যার মাধ্যমে কৃষকরা ন্যায্য দামে তাদের উৎপাদিত পণ্য বিপণন করতে সক্ষম হন। গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে, এই কৌশল প্রয়োগে ধানচাষীদের আয়, বাজার সংযোগ এবং উৎপাদন পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়েছে।”
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর অংশগ্রহণকারীবৃন্দ উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এতে বিভিন্ন দপ্তর থেকে আগত বিশেষজ্ঞ, গবেষক, নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী, কৃষক ও শিক্ষার্থীরা সুচিন্তিত মতামত ও পরামর্শ প্রদান করেন।
সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে ড. ফাতেমা ওয়াদুদ বলেন, “এই কর্মশালার মাধ্যমে গবেষণার ফলাফল মাঠপর্যায়ে পৌঁছে যাবে বলে আমরা আশাবাদী। কৃষক-কেন্দ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে গবেষণা, সরকারি সহযোগিতা এবং বাস্তবায়নের মধ্যে সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অনুষ্ঠানটি একটি প্রাণবন্ত আলোচনার মাধ্যমে শেষ হয়, যেখানে গবেষণালব্ধ জ্ঞান, নীতিনির্ধারণী দিকনির্দেশনা এবং বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশসমূহ উপস্থাপিত হয়। উল্লেখ্য, ১৯৭৮ সালে এ প্রকল্পটি চালু হয়েছিলো যার ধারাবাহিকতায় এ প্রকল্পের মাধ্যমে আজও কৃষকের সার্বিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নানাবিধ কর্মসম্পাদন বাস্তবায়ন করে চলেছে।