ইবিতে ফের সাজিদ হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন © টিডিসি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহ হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ইবি মিল্লাতিয়ান সোসাইটি।

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা দুইটা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তারা বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগানসহ হত্যাকাণ্ডের বিচার চেয়ে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির  আওতায় আনার দাবি জানান।

ইবি মিল্লাতিয়ান সোসাইটির সভাপতি শাহ ফরিদ, ইবি শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মাসুদ রুমি মিথুন ও ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসানসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

সাজিদের বন্ধু ইনসানুল ইমাম বলেন, ‌‘সাজিদ হত্যার শিকার হয়েছে। এই বিষয়ে কোনো টালবাহানা হবে না বলে প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছিল। ভিসি স্যার জানিয়েছিলেন সাজিদের আব্বু যে মামলা করেছিলেন সেটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সিআইডিকে হস্তান্তর করা হবে। কিন্তু ফরেনসিক রিপোর্ট আসার দেড় মাস পরও কেন মামলা সিআইডির কাছে গেলো না, এ বিষয়ে সিরারা চুপ করে আছেন। সাজিদের পরিবারের থেকেই মাঝে মধ্যে খোঁজ নেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের প্রশাসন এতটায় মেরুদণ্ডহীন যে তারা এখনো চুপ করে বসে আছে।’

ইবি মিল্লাতিয়ান সোসাইটির সভাপতি শাহ ফরিদ বলেন, ‘আমরা এই ১৭৫ একরের মধ্যেই আমাদের ভাই সাজিদ আবদুল্লাহকে হারিয়েছি। আমরা শত শত কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে যে ক্যাম্পাসকে আমরা পরিবার মনে করি সেই ক্যাম্পাসেই আমাদের ভাই শহীদ হয়েছে। আজ শহীদ হওয়ার প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হতে চলেছে, এই পর্যন্ত অনেক আন্দোলন হয়েছে, প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদের মানুষও আন্দোলন যোগ দিয়ে আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলেন যে অতি শ্রীঘ্রই আমাদের ভাইয়ের খুনিকে ধরা হবে। কিন্তু আমরা গতকাল সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম এখনো নাকি সিআইডি তদন্তের ভার পায়নি। তাহলে এতদিন কী করলেন আপনারা?’

এ ছাড়া বিচার নিয়ে টালবাহানা করা হলে খুব শিগগির ঐক্যবদ্ধ হয়ে জোরালো কর্মসূচি ঘোষণা করার হুশিয়ারি দেন তিনি।

ইবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন বলেন, ‘সাজিদ হত্যার ৫০ দিন পূরণ হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এখনো হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের বের করতে পারেনি । প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে নতুবা সামনে দিনে ক্যাম্পাস এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হল-সংলগ্ন পুকুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর ভাসমান লাশ উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা। প্রথমে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ধারণা করা হলেও ফরেনসিক রিপোর্টে জানা যায় সাজিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এর পর থেকেই সাজিদ হত্যার বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তী সময়ে প্রশাসনের কাছে সরকারের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে তদন্তের সুপারিশ  করা হলেও এখনো পর্যন্ত মামলা সিআইডির কাছে হস্তান্তরিত হয়নি।