পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হচ্ছে আজ
- ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:১৬
আজ শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সারাদেশে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। মানবতার পথপ্রদর্শক মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ইন্তেকালের স্মরণে এই দিনটি মুসলিম বিশ্বে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয়ে আসছে।
ইসলামি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১২ রবিউল আউয়াল, খ্রিস্টাব্দ ৫৭০ সালের এই দিনে আরবের মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোলজুড়ে জন্মগ্রহণ করেন সর্বশেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। একই দিনে তাঁর ইন্তেকাল ঘটে। দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে ঈদে মিলাদুন্নবী নামে পরিচিত।
ইতিহাসে দেখা যায়, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মের আগেই আরব বিশ্ব অরাজকতা, নৈতিক অবক্ষয়, মূর্তিপূজা, নারী অবমাননা ও সামাজিক অব্যবস্থার মধ্যে নিমজ্জিত ছিল। সে সময় মানুষ বিভ্রান্তি ও অন্ধকারে বাস করছিল। এই ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’ যুগে আল্লাহর নির্দেশে মানবজাতির মুক্তির বার্তা নিয়ে পৃথিবীতে আগমন করেন হজরত মুহাম্মদ (সা.)।
মহানবী (সা.) অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পড়েন। প্রায়ই তিনি মক্কার হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যান করতেন। ২৫ বছর বয়সে বিবি খাদিজা (রা.)-এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়ত লাভ করেন এবং আল্লাহর প্রেরিত শেষ নবী হিসেবে দুনিয়ায় মানুষের পথপ্রদর্শক হন।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণীতে মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং মহানবী (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করে ভ্রাতৃত্ববোধ, সহমর্মিতা ও মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁর বাণীতে বলেন, “সমগ্র মুসলিম উম্মাহর ঐক্য সুসংহত হোক। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুমহান আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে আমাদের ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ নিশ্চিত হোক—এটাই কামনা করি।”
পবিত্র দিনটি উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন মিলাদ মাহফিল, দোয়া, আলোচনাসভা ও শোভাযাত্রাসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও পৃথক বাণীতে ঈদে মিলাদুন্নবীর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তারেক রহমান বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) ছিলেন সমাজে অবহেলিত, নির্যাতিত, দুঃখী মানুষের আশ্রয়দাতা। তিনি নারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও সহনশীল সমাজ গঠনের পথপ্রদর্শক। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করলেই সমাজে শান্তি ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা সম্ভব।’
এদিকে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শ অনুসরণ ছাড়া মানবজাতির প্রকৃত কল্যাণ সম্ভব নয়। তাঁকে পূর্ণাঙ্গভাবে অনুসরণ করলেই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যাবে এবং জান্নাতে প্রবেশের পথ সুগম হবে।’
আজকের দিনটি মুসলিম বিশ্বে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সাথে পালিত হচ্ছে, যেখানে বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবন, ত্যাগ, মহানুভবতা ও ন্যায়ের আদর্শ স্মরণ করে মুসলমানরা আত্মশুদ্ধি ও মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগের অঙ্গীকার করছেন।