একটি আদর্শ বিদ্যালয় গঠনে যা করণীয়

প্রতীকি ছবি
প্রতীকি ছবি © সংগৃহীত

আজকের শিক্ষার্থীরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সূর্যের আলো যেমন পুরো পৃথিবীকে আলোকিত করে, পৃথিবীর রূপ-বৈচিত্র্য আমাদের সামনে দৃশ্যমান করে। তেমনি, শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদেরকে জ্ঞান দানের মাধ্যমে তাদের মন ও জীবনকে আলোকিত করে। শিক্ষকরাই পারেন বিশ্বমানের অর্জিত শিক্ষা,জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা দিয়ে শিক্ষার্থীকে সঠিক দীক্ষায় দীক্ষা দিতে। তাদের মধ্য থেকেই শিক্ষকগণ তৈরি করবেন শিক্ষক, বিজ্ঞানী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, দেশ-প্রেমিক, রাজনীতিবিদ,দক্ষ প্রশাসক, উদ্যোক্তা, খেলোয়াড়, সমাজকর্মী, শিল্পী, কবি-সাহিত্যিক ইত্যাদি। তাঁরা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে এবং বিশ্বকল্যাণে কাজ করবে। তাই একটি আদর্শ বিদ্যালয় গঠনে নিম্নে বিদ্যালয়, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হল:

(ক) একটি আদর্শ বিদ্যালয়ের করণীয়:

১. শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন:
একটি সফল বিদ্যালযয়ের শিক্ষাব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নতি এবং শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কার্যকরী ও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা। এর মধ্যমে শিক্ষকের মান উন্নয়ন, আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতির ব্যবহার, শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা এবং শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করা অন্তর্ভুক্ত।

২. শিক্ষক প্রশিক্ষণ:
পেশাগত দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষকরা আধুনিক পাঠদান পদ্ধতি, বিষয়বস্তু, শিক্ষণ উপকরণ এবং শিক্ষার্থীদের সাথে কার্যকর যোগাযোগের কৌশল ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। যা শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কার্যকর ও গঠনমূলক শিক্ষার পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা করে।

৩. শিক্ষার গুণগত পাঠ্যক্রম:
পাঠ্যক্রমকে আধুনিকীকরণ ও যুগোপযোগী করে নিয়মিত পরীক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক কাজ, প্রজেক্ট এবং আলোচনা ভিত্তিক মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত জ্ঞান ও দক্ষতা যাচাই করা। শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে গবেষণা এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনী ধারণা কাজে লাগানোর জন্য উৎসাহিত করা।

৪. শিক্ষার পরিবেশ:
বিদ্যালয়ের সামগ্রিক পরিবেশ শিক্ষার্থীদের শিক্ষণ ও বিকাশে সহায়তা করে। একটি ভালো শিক্ষার পরিবেশ শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও নিরাপদ হওয়া উচিত। প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে মাল্টিমিডিয়া সমৃদ্ধ শ্রেণীকক্ষ, ইন্টারেক্টিভ কন্টেন্ট, অনলাইন শিক্ষার প্ল্যাটফর্ম, শ্রেণীকক্ষ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, পর্যাপ্ত আলো-বাতাসযুক্ত, খেলার মাঠ, ও ফুল-ফলের বাগান ইত্যাদি স্থান থাকা উচিৎ যাতে শিক্ষার্থীদের জন্য আনন্দদায়ক ও শিক্ষামূলক হয় এবং তারা স্বাচ্ছন্দ্যে শিখতেও পারে।

৫. সমৃদ্ধ লাইব্রেরী ও আধুনিক  ল্যাব:
বিদ্যালয়ে সমৃদ্ধ লাইব্রেরী, কম্পিউটার ও বিজ্ঞান ল্যাব থাকা মানে সেখানে বিভিন্ন ধরনের বই, ডিজিটাল রিসোর্স, আধুনিক সরঞ্জাম ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন একটি গবেষণাগার থাকা যা শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জন ও ব্যবহারিক শিক্ষার জন্য সহায়ক হবে। এই সুবিধাগুলো শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমকে উন্নত করে এবং তাদের শিক্ষা ও বিনোদন উভয়কেই সমৃদ্ধ করে।

৬. উদ্ভাবনী শিক্ষণ (Innovative Teaching):
এটি প্রচলিত শিক্ষাদান পদ্ধতির বাইরে গিয়ে নতুন এবং সৃজনশীল পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শেখানো হয়। এর মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, তাদের মধ্যে জিজ্ঞাসু মনোভাব তৈরি করা এবং সমস্যা সমাধান করার দক্ষতা বৃদ্ধি করা।

৭. সহপাঠ্যক্রম কার্যক্রম (Co-curricular Activities):
শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা, স্কাউটিং, সংস্কৃতি চর্চা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমের সুযোগ তৈরি করা। তাদের মধ্যে নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ জাগ্রত করার জন্য মূল্যবোধ শিক্ষার ব্যবস্থা করা।

৮. শিক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি:
শিক্ষার মূল্যায়ন পদ্ধতি হতে হবে বস্তুনিষ্ঠ এবং শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক বিকাশে সহায়ক। শুধুমাত্র পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে মূল্যায়ন না করে, ধারাবাহিক মূল্যায়ন এবং বিভিন্ন ধরণের অ্যাসেসমেন্ট অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।

৯. শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি নিশ্চিত করণ:
শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য কিছু কার্যকর কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে যেমন- ইন্টারেক্টিভ ক্লাস নেয়া, বিভিন্ন শিক্ষামূলক গেম বা কুইজের আয়োজন করা, ভালো পারফর্মেন্সের জন্য পুরষ্কার দেয়া, শিক্ষামূলক ভ্রমণে নিয়ে যাওয়া, শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখা।

(খ) একজন আদর্শ শিক্ষকের করণীয়:

শিক্ষক পথ প্রদর্শক ও অনুপ্রেরণার উৎস মাত্র। অধ্যায়নের কাজটি শিক্ষার্থীদের করতে হবে। বিজ্ঞানী টমাস এডিসন বলেছেন,  প্রতিভার একভাগ প্রেরণা, আর নিরানব্বই ভাগ কঠিন পরিশ্রম। তাই এ পরিশ্রমের কাজটি শিক্ষার্থীরাই করবেন। হাদীসে বর্নিত আছে “আল্লাহর পরে,রাসুলের পরে ওই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা মহানুভব যে বিদ্যার্জন করে ও পরে তা প্রচার করে।”(সহিহ বোখারি : ৪৬৩৯। নিম্নে একজন আদর্শ শিক্ষকের করণীয় আলোচনা করা হল:

১. নির্ধারিত সময়ে শ্রেণিকক্ষে হাজির হবেন এবং নির্ধারিত সময়ে শ্রেণির পাঠ কার্যক্রম শেষ করবেন।
২. ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়মিত হাজিরা নিবেন।শিক্ষার্থীদের নাম, ঠিকানা ও পিতা-মাতার মোবাইল নাম্বার হাজিরা খাতায় লিখে রাখবেন। যাতে প্রয়োজনে অভিবাকের সাথে যোগাযোগ করা যায়।
৩. প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা যেমন অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, ইন্টারেক্টিভ সফটওয়্যার, মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট ব্যবহার করে শিক্ষাদান করার চেস্টা করবেন। 
৪. শিক্ষার্থীদের মধ্যে লেখা-পড়ার  অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করবেন। যাতে তারা আনন্দের সাথে লেখা-পড়া শিখতে পারে। ক্লাস গ্রহণ যেন আনন্দঘন হয়, যান্ত্রিক না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
৫. ক্লাসে পড়াতে গিয়ে কোথায় পড়া তা শিক্ষার্থীদেরকাছে জেনে নিবেন।কতটুকু পড়াবেন সেটার পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাসে প্রবেশ করবেন। ক্লাস শেষে  দৈনিক পাঠদানের বিষয় অফিস কপি ডায়েরিতে লিখে রাখবেন।
৬. বিএড-এমএড প্রশিক্ষণ থেকে লব্ধ জ্ঞান অনুযায়ী শিক্ষার্থীকেন্দ্রিক পাঠদান করবেন। যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের পাঠ গ্রহণে সবসময় সক্রিয় থাকে।
৭. শিখনফল অর্জিত হচ্ছে কি-না তা মূল্যায়ন করবেন। প্রচলিত পরীক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মূল্যায়ন পদ্ধতি ব্যবহার করা, যেমন - স্ব-মূল্যায়ন, সহপাঠী মূল্যায়ন, এবং ব্যবহারিক পরীক্ষা। শিক্ষার্থীদের প্রতি বিদ্বেষ এবং কারো প্রতি পক্ষপাতিত্ব করবেন না।পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করার কৌশল শিখাবেন।
৮. পাঠ আয়ত্ব করার কৌশল শিখাবেন। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর চাহিদা, আগ্রহ ও সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করা
৯. শিক্ষার্থীর সুখ-দুঃখ, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবেন। দ্বীনী ও দেশাত্মবোধক দায়িত্ব পালনে সচেতন করবেন। শিক্ষার্থীদের প্রতি সব সময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করবেন।
১০. শিক্ষার্থীর অসদাচরণ কিংবা পড়া না পারার জন্য দৈহিক ও মানসিক শাস্তি দিবেন না। ভালোবেসে সংশোধনের চেষ্টা করবেন।পঠন-পাঠনে তাদের যথাযথ পরামর্শ ও নির্দেশনা প্রদান করবেন।
১১. শিক্ষার্থীদের জ্ঞানস্পৃহা বাড়াতে তাকে প্রশ্ন করতে দিবেন এবং তিনি উত্তর দিতে চেষ্টা করবেন।
১২. শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জন্য একজন অনুকরণীয় আদর্শ মানুষ হবেন। তাদেরকে ছোটদের স্নেহ, বড়দের সম্মান ও সমবয়সীদের সঙ্গে করণীয় আচরণ শিখাবেন।

(গ) শিক্ষার্থীদের করণীয়:

শিক্ষার্থীদের জীবনের প্রথম ও প্রধান লক্ষ্য হলো অধ্যয়ন ও জ্ঞান অর্জন করা। তাই তাদের কঠোর পরিশ্রম ও তপস্যার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনে আত্মনিয়োগ করতে হয়। কারন ভবিষ্যতে দেশ ও জাতিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার গুরুদায়িত্ব তাদের ওপরই অর্পিত হবে। সে গুরুদায়িত্ব বহন করার জন্য তাদেরকেই সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে।তাই একজন শিক্ষার্থীকে পাঠ্যপুস্তকের বাইরে আরও অনেক বেশি পড়াশোনা করতে হয়। প্রকৃত জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে তাকে মানব-চরিত্রের নানাবিধ সৎ-গুণাবলিও অর্জন করতে হয়। যেমন:

১. অধ্যবসায়: শিক্ষার্থীকে নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত থেকে মনোযোগ সহকারে অধ্যায়ন করতে হবে। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনই ছাত্রজীবনের প্রধান লক্ষ্য। অধ্যবসায় ও পরিশ্রম দ্বারা সাফল্য অর্জন করতে হবে। তাই ছাত্রজীবনে অধ্যবসায়ের গুরুত্ব অপরিসীম।

২. চরিত্র গঠন:  চরিত্র হচ্ছে মানব জীবনের মুকুট স্বরূপ। শিক্ষার্থীদের একটি প্রধান কাজ হলো চরিত্র গঠন ৷ তাই এ সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে সত্যবাদিতা, সহানুভূতি, সহযোগিতা, পরোপকার, উদারতা, ধৈর্য, সংযম, দেশপ্রেম প্রভৃতি সদ্গুণ আয়ত্ত করতে হবে।

৩. নিয়মানুবর্তিতা : শৃঙ্খলা ছাড়া মানবজীবন সুন্দরভাবে গড়ে উঠতে পারে না। এই শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতা ছাত্রজীবনেই অর্জন করতে হয়। এ গুণ অর্জনের ওপর তার ভবিষ্যতের সাফল্য নির্ভর করে।

৪. সময়ানুবর্তিতা: সময়নিষ্ঠা একটি বড় গুণ। যে মানুষ সময়ের মূল্য দিতে জানে না, সে জীবনে উন্নতি করতে পারে না। তাই ছাত্রজীবন থেকেই সময়নিষ্ঠার অভ্যাস করতে হবে, সময়ের মূল্য দিতে হবে।৫. খেলাধুলা ও ব্যায়াম: স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। আর সুস্থ শরীরে বাস করে সুস্থ মন। শরীর সুস্থ না থাকলে নিয়মিত লেখাপড়া হয় না। তাই শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য ছাত্রদের নিয়মিত খেলাধুলা ও ব্যায়াম করা খুব জরুরি।
৬. সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ: ছাত্রদের লেখাপড়ার পাশাপাশি অন্যান্য সহ-শিক্ষা কার্যক্রমেও অংশগ্রহণ করা প্রয়োজন। বিতর্ক প্রতিযোগিতা, উপস্থিত বক্তৃতা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন, গান, নাচ, অভিনয় ইত্যাদিতেও তাকে অংশ নিতে হবে। 

(ঘ) অভিভাবকের করণীয়:

শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়নে অভিভাবকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক দিকনির্দেশনা, নিয়মিত মনোযোগ ও অনুপ্রেরণা প্রদান করলে শিক্ষার্থীরা সহজেই শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে এবং ভবিষ্যতে সফল হতে পারে। অভিভাবকদের উচিত শিশুর পড়াশোনাকে আনন্দদায়ক ও সহজ করে তোলা, যাতে তারা ভবিষ্যতে আত্মবিশ্বাসী ও দক্ষ নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারে।

১. আপনার সন্তান কখন স্কুলে যায় ও স্কুল থেকে কখন বাসায় ফিরে।
২. আপনার সন্তানকে নিয়মিত স্কুলে পাঠাবেন, আসা-যাওয়া নিশ্চিত করবেন।
৩. তাকে স্মার্টফোন ব্যবহার করতে নিরুৎসাহিত করবেন, যদি কোন তথ্যের প্রয়োজন হয় তবে আপনি পাশে থেকে সহায়তা করবেন। সে স্কুলে আসার সময় মোবাইল ফোন ও ইয়ার ফোন নিয়ে যায় কি না।
৪. যদি সে প্রাইভেট পড়ে, কোথায় প্রাইভেট পড়ে, কখন পড়ে, সেখানে যোগাযোগ রাখবেন।
৫.যে কোনো সমস্যা সম্পর্কে জানতে শ্রেণি শিক্ষক বা প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাথে যোগাযোগ করবেন। প্রয়োজনে মাঝে মধ্যে তাকে না জানিয়ে স্কুলে যাবেন।
৬. শ্রেণি শিক্ষকের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন। যে সকল বিষয়ে আপনার সন্তান দূর্বল শিক্ষকের সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধান করেন।
৭. প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা দিবেন না। মাঝে মধ্যে স্কুল ব্যাগ চেক করবেন। কার সাথে মিশে জানতে চেষ্টা করবেন।
৮. সূর্য ওঠার আগেই  আপনার সন্তানকে জাগিয়ে দিন।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও কোরআন পড়ার তাগিদ দিন।
৯. রাতের পড়া যা বিদ্যালয় থেকে দেওয়া হোমওয়ার্ক নিয়মিত নিশ্চিত করবেন এবং সন্তানের পুষ্টিকর খাওয়া নিশ্চিত করবেন। 
১০. সব সময় সন্তানকে নিয়মিত কাউন্সিলিং করে ভালো কাজের উৎসাহ ও খারাপ কাজের অনৎসাহিত করবেন।
১১. মাঝে মধ্যে বিভিন্ন দর্শনিয় স্থনে বেড়াতে নিয়ে যাবেন।

একজন শিক্ষক হলেন আলোকিত মানুষ ও সমাজের আলোর বাতিঘর। দেশের সর্বোচ্চ স্তম্ভ হচ্ছেন শিক্ষক। একটি আদর্শ প্রজন্ম ও জাতী তৈরি করতে একজন আদর্শ শিক্ষকের কোন বিকল্প নাই। শিক্ষকতা শুধু পড়ানোর নাম নয়, এটি চিন্তা, চেতনা, নৈতিকতা সংশোধনের নামও বটে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি  শিক্ষক হিসেবে প্রেরিত হয়েছি। (ইবনে মাজাহ : ২২৫) একজন শিক্ষক তখনই সফল হন যখন তিনি প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে পারেন। আর শিক্ষার্থীরা তখনই সফল হয় যখন শিক্ষকের নির্দেশিত শিক্ষাকে আত্মস্থ করতে পারে। যদি শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর সম্পর্ক পারষ্পরিক ঘনিষ্ঠ হয়, তাহলে যে কোন সমস্যা গভীরভাবে অনুধাবন করে সহজভাবে সমাধান হয়। তাই শিক্ষক-ছাত্র ও অভিভাবক মিলেই প্রতিষ্ঠান।

লেখক: সিনিয়র এক্সিকিউটিভ, জনসংযোগ বিভাগ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ