মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান ঢাবি অধ্যাপকের

ড. জোবাইদা নাসরীন
ড. জোবাইদা নাসরীন © সংগৃহীত

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মহান মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান নিয়ে আয়োজিত একটি সেমিনার মব সন্ত্রাসের মুখে ভণ্ডুল হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সকালে ডিআরইউ’র শফিকুল কবির মিলনায়তনে ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি সংগঠন এ সেমিনারের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে সংবিধান বিশেষজ্ঞ, আইনবিদ, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে হঠাৎ করেই ‘জুলাই যোদ্ধা’ ব্যানারে আল আমিন রাসেলের নেতৃত্বে কিছু শিক্ষার্থী ও স্থানীয় জনতা অনুষ্ঠানস্থল ঘেরাও করে। তারা আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীসহ উপস্থিত অতিথিদের প্রবেশে বাধা দেন এবং অনুষ্ঠান পণ্ড করতে স্লোগান, গালিগালাজ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে দেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।

পরে স্থানীয় যুবদল ও বিএনপি নেতা-কর্মীরাও বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে যোগ দেন। একপর্যায়ে মব সন্ত্রাসের মাধ্যমে গোটা আয়োজন ভণ্ডুল হয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠানে উপস্থিত কয়েকজন অতিথিকে শারীরিকভাবে হেনস্তাও করা হয়।

ঘটনার কিছুক্ষণ পর পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও তারা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং কয়েকজন অতিথিকে আটক করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন রাজনীতি বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে ঘটনার প্রতিবাদ জানান। পাশাপাশি তিনি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানান।

তিনি লিখেছেন, “পুলিশ গ্রেফতার করার কথা আক্রমণকারীদের, কিন্তু করছে আক্রমণের শিকার হওয়া জনগণকে। পুলিশ মবের কথা শুনছে বা মব পুলিশকে চালাচ্ছে। তার মানে তো হলো এই মব বিচ্ছিন্ন নয়। এটির পেছনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা আছে।”

তিনি আরও লিখেছেন, “মুক্তিযুদ্ধ এদেশের মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ। বাংলাদেশ রাষ্ট্রটির ভিত্তি। মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ মানেই তাদের ক্ষোভ মুক্তিযুদ্ধকে নিয়ে। সরকারের নিশ্চুপতা মানেই হলো সরকারও আসলে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী মতাদর্শকেই বহন করছে। আর তা না হলে সরকারকে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেই হবে এবং পরিষ্কার করতে হবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে তাদের অবস্থান।”