‘কমপ্লিট শাটডাউনে’ দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, পরীক্ষা বয়কট শিক্ষার্থীদের
- ৩১ আগস্ট ২০২৫, ২১:৫২
তিন দফা দাবিতে দেশজুড়ে সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরতদের প্ল্যাটফর্ম ‘প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন’ গতকাল বুধবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) সব প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান ও পরীক্ষাসহ সব একাডেমিক কার্যক্রম থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সাকিবুল হক লিপু দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘সারা দেশের সকল প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে কমপ্লিট শাটডাউন রয়েছে। আমাদের আজকের পরীক্ষা আমরা বয়কট করেছি এবং আমাদের শাটডাউন কর্মসূচি চলছে।’
এদিকে সকাল ১০টায় বুয়েটের কয়েকটি বিভাগে দেখা যায়, কোথাও কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন না। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ভবনের নিরাপত্তারক্ষী গোলজার হোসেন বলেন, ‘আজকে এমনিই বুয়েটে সাপ্তাহিক বন্ধ। কেউ তো আসবে না।’ তবে কিছু বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। বুয়েটের এমই ভবনের নিরাপত্তারক্ষী মাসুদ রানা বলেন, ‘গতকাল থেকেই শাটডাউন চলছে।’
এর আগে, তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত বুয়েট শিক্ষার্থীরা গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার সকাল ১১টার দিকে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন। পরে বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ‘যমুনা’র দিকে রওনা দিলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনে পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল ও জলকামান ব্যবহার করে। লাঠিপেটার ঘটনাও ঘটে, যাতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন।
পুলিশি অভিযানের পর বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে শিক্ষার্থীরা আবারও শাহবাগ মোড়ে জড়ো হন এবং রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা মোড় ছেড়ে চলে যান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি হলো—
১. নবম গ্রেডের সহকারী প্রকৌশলী পদে কেবল পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দিতে হবে এবং ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএসসি ইন ইঞ্জিনিয়ারিং হতে হবে;
২. দশম গ্রেডে বর্তমানে শুধুমাত্র ডিপ্লোমাধারীরা আবেদন করতে পারেন, সেখানে উচ্চ ডিগ্রিধারীদের আবেদন করার সুযোগ রাখতে হবে;
৩. কেবলমাত্র বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্নকারীরাই যেন ‘প্রকৌশলী’ বা ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবী ব্যবহার করতে পারেন, সে বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকালই সরকার প্রকৌশল পেশায় বিএসসি ডিগ্রিধারী ও ডিপ্লোমাধারীদের পেশাগত দাবির যৌক্তিকতা যাচাই করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন এবং দাবি আদায়ে অনড় রয়েছেন।