ইয়ামালের গাড়ি, বান্ধবী বিতর্কে ভিন্ন সুর, পাশে দাঁড়ালেন স্পেনের কোচ

লামিনে ইয়ামাল
লামিনে ইয়ামাল © ফাইল ছবি

মাস দুয়েক ধরে মাঠের ফুটবলের চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনাতেই বেশি আলোচনায় লামিনে ইয়ামাল। জুনের ছুটি থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত কয়েকজন নারীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তার। ১৩ জুলাই নিজের ১৮তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও আইনি ঝামেলায় পড়েন ইয়ামাল। কারণ, অতিথিদের বিনোদনের জন্য বামনদের ডেকেছিলেন তিনি।

লামিনের ওই জন্মদিনের আসরে ছিলেন আর্জেন্টিনার গায়িকা ও র‍্যাপার নিকি নিকোল। স্প্যানিশ সাংবাদিক হাভিয়ের হোয়োস ইয়ামাল ও নিকোলকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখার দাবি করার পর থেকেই গুঞ্জন—নিকোলের সঙ্গেই প্রেম করছেন বার্সেলোনার এই তরুণ তারকা।

সম্পর্কের ব্যাপারে কেউ মুখ না খুললেও গতকাল ইয়ামাল নিজেই আগুনে ঘি ঢেলেছেন। কাল নিকোলের ২৫তম জন্মদিনে তার সঙ্গে একটি ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছেন। সঙ্গে সঙ্গেই নানা মহলে আলোচনা—ফুটবলে মনোযোগ হারাচ্ছেন কি ইয়ামাল? এখনই নিয়ন্ত্রণ না আনতে পারলে তার ক্যারিয়ার ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলেও অনেকে মনে করছেন।

বার্সার সাবেক মিডফিল্ডার এমানুয়েল পেতিত অবশ্য ইয়ামালকে সরাসরি সতর্ক করে দিয়েছেন। তবে স্পেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে ভিন্ন সুরে কথা বলেছেন। তার আহ্বান, ব্যক্তিজীবন নিয়ে সমালোচকদের বাড়াবাড়ি বন্ধ করে ইয়ামালের খেলা উপভোগ করা উচিত।

কারণটা স্পষ্ট। গত মৌসুমে বার্সাকে ঘরোয়া ট্রেবল (লা লিগা, কোপা দেল রে, সুপার কাপ) জেতাতে দারুণ ভূমিকা রেখেছিলেন ইয়ামাল। নতুন মৌসুমেও সেই ধারাবাহিকতা দেখা যাচ্ছে। লা লিগার প্রথম দুই ম্যাচে করেছেন একটি গোল, করিয়েছেন তিনটি।

স্পেনের রাষ্ট্রায়ত্ত রেডিও স্টেশন আরএনইতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফুয়েন্তে বলেছেন, ‘লামিনের বয়স ১৮ হলেও সে যথেষ্ট পরিণত। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছে তার। জটিল পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দিতে হয়, সে জানে। দলের প্রতি আত্মত্যাগ, উদারতার অসাধারণ ক্ষমতা আছে ওর। সে আসলেই এক প্রতিভা। সে গাড়ি কিনল, মোটরসাইকেল কিনল নাকি বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করল—এসবের চেয়ে ওর খেলার দিকেই মনোযোগ দেওয়া উচিত আমাদের। সমালোচনার মতো কিছুই করেনি সে।’

ইয়ামালের প্রতিভা এতটাই বিরল যে তাকে প্রায়ই লিওনেল মেসির সঙ্গে তুলনা করা হয়। ফুয়েন্তে মনে করেন, এই তুলনা বোঝা নয়, বরং অনুপ্রেরণা, ‘মেসির সব অসাধারণ দিকগুলো লামিনেকে গ্রহণ করতে হবে। আশা করি, আমরা মেসিকে যেভাবে উপভোগ করেছি, ইয়ামালকেও ঠিক সেভাবে উপভোগ করব।’

ফ্রান্সের হয়ে ১৯৯৮ বিশ্বকাপজয়ী এই মিডফিল্ডার স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এএসকে বলেছেন, ‘কৌশল, দূরদর্শিতা, শক্তি, ড্রিবলিং—সব ক্ষেত্রেই সে অনন্য। কিন্তু মানসিকতার জায়গাটা উন্নত করতে হবে। সেটা বারবার প্রমাণ করতে হবে বার্সেলোনা ও স্পেনের হয়ে। সামনে ২০২৬ বিশ্বকাপ। তবে নিজেকে সত্যিকার অর্থে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিততে হবে।’

পেতিত আরও যোগ করেছেন, ‘ফর্ম ধরে রাখতে পারলে একদিন ব্যালন ডি’অর জিতবে সে। কিন্তু খারাপ সময় এলে অনেকেই তাকে নামিয়ে আনতে চাইবে। তখন কেমন প্রতিক্রিয়া জানাবে—সেটাই আসল পরীক্ষা। বিষয়টা এমবাপ্পের মতোই। টানা কয়েক বছর সবকিছু দারুণ চলছিল এমবাপ্পের। হঠাৎ ধস নামল। ফর্মও হারাল। ইয়ামালকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে আরও সচেতন হতে হবে। মাঝেমধ্যে ওর মধ্যে যে ঔদ্ধত্য দেখি, সেটা ভালো লক্ষণ নয়।’