ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে হইচই বেশি, উন্নত বিশ্বে নেই এমন সংস্কৃতি
- ২৫ আগস্ট ২০২৫, ২০:৫৬
পৃথিবীতে অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয় আছে। শুধু আমেরিকা ও ইউরোপ মিলে প্রায় ৮-১০ হাজার বিশ্ববিদ্যালয়। বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়েই স্টুডেন্ট ইউনিয়ন থাকে। সময়ে সময়ে স্টুডেন্ট ইউনিয়নের নির্বাচন হয়। যুগ যুগ ধরে হচ্ছে।
যারা নির্বাচন করে তারা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে না। বা রাজনৈতিক দলকে প্রতিনিধিত্ব করে না। রাষ্ট্রের কোনো রাজনৈতিক দলের দাসত্ব করে না। সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়ে, তারাও জানে না স্টুডেন্ট ইউনিয়নে কে বা কারা আছে। প্রয়োজন হলে খোঁজ নেয়, কাজের স্বার্থে।
আপনি কোনো দিন দেখেছেন হার্ভার্ড, এমআইটি, প্রিন্সটন, ইউপেন, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ইউনিয়নের নির্বাচন নিয়ে নিউজে সাড়া জাগাতে! তাদের দেশের নিউজ মিডিয়াতেই? দেখবেন না।
নিজেও বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টুডেন্ট ইউনিয়নের নির্বাচন দেখেছি। অথচ ২০ কোটি মানুষের দেশের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্টুডেন্ট ইউনিয়নের’ নির্বাচন হবে। দেশের প্রত্যেকটা মিডিয়া থেকে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়া—সর্বত্রই এই খবর। দিনভর একই খবর। কী অদ্ভুত এক দেশ! এভাবেই ছিলে, এভাবেই চলছে।
মনে হচ্ছে ডাকসুর নির্বাচনগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে গত ১০০ বছরে এক অনন্য জায়গায় নিয়ে গেছে। কিংবা আগামীর নির্বাচনগুলো নিয়ে যাবে। আমাদের সমস্যা আসলে সাধারণ মানুষের না। আমাদের সমস্যা যারা পলিসি মেকার, যারা দায়িত্বশীল, যারা শাসকগোষ্ঠী তারাই। তারাই তো ভালো সংস্কৃতির সূচনার পক্ষে শক্ত হতে পারে না। শিক্ষা দিতে জানে না। অভিভাবকত্বের দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারে না—এনাফ ইজ এনাফ!
বরং সমাজের যে অপসংস্কৃতিতে তাল দিলে তালি পাওয়া যায়, সেটাই করে যায়। দেশে অন্তত দেড়শো বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সবগুলোতেই স্টুডেন্ট ইউনিয়ন থাকা উচিত। এবং প্রতি বছর বা দুই বছর অন্তর অন্তর নির্বাচন হওয়া উচিত। সেসব ইউনিয়নের কাজ কোনো দল বা সরকারকে সার্ভ করা না। শুধুমাত্র নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণা, শিক্ষার্থীদের অসুবিধা ও অধিকার নিয়ে কাজ করা। শিক্ষকদের মানোন্নয়নের মাপকাঠি নিয়ে কাজ করা।
অথচ আমরা কি করি! যে জাতি যা চায়, সে জাতি তাই পায়। যেমন নিয়ত ও উদ্দেশ্য, ফলাফল ঠিক তেমনই হয়।
ড. রউফুল আলম: গবেষক ও লেখক