মির্জা ফখরুলের সতর্কবার্তা: বাংলাদেশে উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিচ্ছে, রুখতে না পারলে দেশ বিপন্ন

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর © সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার সতর্কবার্তা দিয়েছেন যে, বাংলাদেশে নতুন করে উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিচ্ছে এবং এটি রুখে না দেওয়া গেলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হতে পারে।

জন্মাষ্টমী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে একটা নতুন করে কথা উঠছে, ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশে একধরনের উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। এই উগ্রবাদকে মাথাচাড়া দিতে দেওয়া যাবে না। নইলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষা পাবে না।”

তিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বও স্মরণ করিয়ে বলেন, “১৯৭১ সাল আমাদের স্বাধীন দেশ দিয়েছে, ভূখণ্ড দিয়েছে। আমাদের স্বাধীন সত্তা দিয়েছে এবং সেই কারণেই আজকে আমরা টিকে আছি। ২৪–২৫ জুলাই–আগস্টের শহীদরা আমাদের একটি নতুন গণতন্ত্রের স্বপ্ন দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। কিন্তু এখন চেষ্টা হচ্ছে ’৭১–কে ভুলিয়ে দেওয়ার। এর বিরুদ্ধে আমাদের সমস্ত নাগরিককে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।”

সাম্প্রদায়িকতাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে সতর্ক করে ফখরুল বলেন, “বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতাকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। আমাদের সেই রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান—সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সত্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “এই দেশটা আমার, আপনার, আমাদের সবার। সংকটের সময় আমরা সবসময় বলেছি, মানুষকে মানুষ হিসেবেই বাঁচাতে হবে। তাই জাতিগত, ধর্মীয় বা রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে সেই ঐক্যের ডাক বাস্তবায়ন করলে স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রাম সফল হবে।”

মির্জা ফখরুল ধর্মীয় প্রসঙ্গে বলেন, “ভগবান কৃষ্ণের জন্ম হয়েছিল দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের জন্য। যুগে যুগে অন্যায়-অবিচার বেড়ে গেলে অবতারের আবির্ভাব হয়েছে। ইসলামসহ প্রতিটি ধর্মেই নবী-রাসুলরা মানুষকে সঠিক পথে ডেকেছেন। আমরা সবাই এই দেশের নাগরিক—হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, বিএনপি, আওয়ামী লীগ কিংবা অন্য কেউ। আমরা সবাই বন্ধু।”

সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সহসভাপতি সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী প্রমুখ।