শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব নিয়ে ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজের মারপিট বন্ধ করতে হবে
- ২৪ আগস্ট ২০২৫, ০৯:১৭
রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাতজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মধ্যে সায়েন্স ল্যাব মোড়ে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে ঢাকা কলেজ ও ঢাকা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ একটি ঢাকাই ঐতিহ্যের রূপ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য। সেই সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব নিয়ে ঢাকা কলেজ-সিটি কলেজের মারপিট বন্ধ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) বিকেলে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে এ মন্তব্য করেন পিনাকী ভট্টাচার্য। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘ঢাকা কলেজ আর সিটি কলেজ শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক মাইর পিট একটা ঢাকাই ঐতিহ্যের রুপ নিচ্ছে। এইটা দ্রুত বন্ধ হওয়া দরকার। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কেই দায়িত্ব নিতে হবে। খুঁজে দেখতে হবে এই দ্বন্দ্বের সামাজিক-অর্থনৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক উৎসগুলো কী কী?
কেন এবং কীভাবে দুই কলেজের মধ্যে ঘনঘন মারামারি হয় সেটা খুঁজে বের করা দরকার। গবেষণায় যেমন প্রশ্ন হতে পারে, ছাত্রদের দৃষ্টিতে “ঢাকা কলেজ বনাম সিটি কলেজ” দ্বন্দ্বের মূল কারণ কী? আশেপাশের মার্কেট, দোকানদার ও ব্যবসায়ীরা কীভাবে এই দ্বন্দ্বকে প্রভাবিত করে? শিক্ষক, প্রশাসন ও প্রাক্তন ছাত্ররা এই সমস্যাকে কীভাবে দেখেন? ছাত্রদের মধ্যে দ্বন্দ্বের ফলে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, পড়াশোনা ও সামাজিক পরিচয় কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়?
কোন কোন ক্ষেত্রে দুই কলেজের ছাত্ররা সহযোগিতা করে, আর কোথায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে? এইটা ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন করে শুরু করতে পারেন। প্রতিটি কলেজ থেকে ২টি গ্রুপ, প্রতিটি গ্রুপে ৮–১০ জন ছাত্র। সেইখানে আলোচনা করবেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভিজ্ঞতা, মারামারির কারণ, নিজেদের প্রত্যাশা, সমাধানের আইডিয়া। এর পাশাপাশি, কি-ইনফর্ম্যান্ট ইন্টারভিউ করতে পারেন, যেমন, কলেজ শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা, স্থানীয় দোকানদার বা ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধি, প্রাক্তন ছাত্র, স্থানীয় সাংবাদিক/সমাজকর্মী।
আরেকটা কাজ করতে হবে, তা হচ্ছে, রিয়েল লাইফ অবজারভেশন। কীভাবে? কলেজ ছুটির পর ছাত্রদের আড্ডা, মার্কেটের চায়ের দোকান, বাসস্ট্যান্ডে পারস্পরিক ইন্টারঅ্যাকশন অবজার্ভ করতে হবে গবেষকদের। পুলিশের সাহায্য লাগবে “হটস্পট” লোকেশন চিহ্নিত করা যেখানে প্রায়ই সংঘর্ষ হয়। এইটার কোন প্যাটার্ন আছে কিনা দেখতে হবে। সাথেসাথে ন্যারেটিভ কালেকশন করতে হবে। ১০–১২ জন ছাত্রকে নিজের ভাষায় লিখতে/বলার সুযোগ দিতে হবে। বলতে হনে লিখো, “আমাদের কলেজ আর ওই কলেজের মধ্যে কেন সমস্যা হয়, আমি যা দেখি...” এতে আনফিল্টার্ড গল্প বা ধারণা পাওয়া যাবে।
এরপরে আমরা দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের ব্যাপারে ভাবতে পারবো। আপনি প্রব্লেমকে কী মেথডে এড্রেস করবেন সেইটা ঠিক না করলে আপনার ঝামেলা জিন্দেগীতে যাবেনা।
বাংলাদেশের অধিকাংশ সমস্যাই সমাধানযোগ্য। এমনকি বাংলাদেশের সোস্যাল মিডিয়া ইউজারদের এটিটিউড এইটা কয়েক বছরে একেবারে পাল্টায়ে দেয়া যায়। যদি রাইট মেথড এপ্লাই করা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে, কাজটা করবে কে?