ডাকসু নির্বাচন
‘নাম কিংবা দলীয় পদবি নয়, বিচার করুন আমার কাজে’
- টিডিসি রিপোর্ট
- ২০ আগস্ট ২০২৫, ১৩:২৭
‘আমার নাম কিংবা কোনো দলীয় পদ-পদবি দিয়ে নয়, আমাকে বিচার করুন আমার কাজে’ এমন আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদপ্রার্থী ইসরাত জাহান নিঝুম। আজ মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে এসব কথা তুলে ধরেছেন তিনি।
ইসরাত জাহান নিঝুম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক ছাত্রী।
পোস্টে তিনি লেখেন, আমার ইশতেহার দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত আমার কিছু লেখা। আমি আজ ডাকসুতে প্রার্থী হচ্ছি বলে পরিবেশ, স্বাস্থ্য বা ক্যাম্পাস নিয়ে লিখতে বা ভাবতে বসেছি বিষয়টা মোটেই সেরকম নয়। আমি আমার এসব ভাবনাকে আজ থেকে ৪ বছর আগে থেকে পত্রিকার পাতায় স্থান দিয়েছি। আমি তখন জানতাম না আমার এই ভাবনাগুলো একদিন আপনাদের মাঝে ইশতেহার হয়ে দাঁড়াবে কিন্তু আজ যেহেতু সুযোগ এসেছে তাই আমার ভাবনা বা পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে আপনাদের সমর্থনের প্রত্যাশায় রেখে দিলাম।
ইসরাত জাহান নিঝুম লেখেন, আপনারা হয়ত জানেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদ ও গ্রিন ফিউচার ফাউন্ডেশন নামে দুইটা সংগঠন রয়েছে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করে। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর থেকে হল ডিবেট, পত্রিকায় লেখালেখি করার পাশাপাশি আমার পছন্দের জায়গা পরিবেশ ও স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার আগ্রহ তৈরি হয়। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করেছি। পাশাপাশি গ্রিন ফিউচার ফাউন্ডেশনের একজন অ্যাক্টিভ ভলান্টিয়ার হিসেবে অনেক কাজ করেছি। এ ছাড়া রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে পড়ার সময় থেকেই আমি কলেজ ক্যাম্পাসে এসব কার্যকলাপে আগ্রহের সাথে অংশগ্রহণ করতাম। তাই সাংগঠনিক দক্ষতা আমার কথায় নয়, আমার কাজের মাধ্যমে প্রতিফলিত হোক। আমি বিশ্বাস করি ‘With opportunity comes responsibility’--Winston Churchill
এই প্রার্থী লেখেন, গত ৪ বছরের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আমি কী করেছি, কী করি নাই সে স্বাক্ষরস্বরূপ আমার কিছু ফটো আমি নিচে সংযোজন করে দিয়েছি। বিশেষ করে আন্দোলনের দিনগুলোতে হল থেকে প্ল্যাকার্ডে বিভিন্ন স্লোগান লিখে নেয়া, শাহবাগে স্লোগান দেয়া, ছাত্রলীগের হামলার শিকার হওয়া, হল ভেঙে রাতে বের হওয়া, এক দফায় শামিল হওয়া সবকিছুই ফটোগুলোতে স্পষ্ট। কলেজে থাকা অবস্থায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমার এই প্রতিবাদী অবস্থান একদিনে গড়ে উঠেনি। আমার বোন নুসরাত জাহান আপনারা অনেকেই হয়ত তাকে চেনেন। মৈত্রী হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে যিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। আমি তার উত্তরসূরি। এছাড়া নারীদের অধিকার, নিরাপদ ক্যাম্পাস, যথাযথ শিক্ষাব্যবস্থা, সরকারি চাকরিতে জনপ্রত্যাশাসহ সমাজের নানা অসংগতি নিয়ে আমি দীর্ঘদিন পত্রিকার পাতায় নিজের অবস্থান জানান দিয়েছি। (নিচে সংযোজিত)।
কেমন ক্যাম্পাস তিনি চান এমন প্রসঙ্গে তিনি লেখেন, তখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ভয়ে কেউ কথা বলত না। আমার মাথায় আসলো পত্রিকায় কিছু লেখা যায় কি না। আমি তখন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তারপরও সাহস নিয়ে জীবনের প্রথম লেখা পাঠালাম ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গুন্ডাবাহিনী আর গেস্ট রুম কালচারের বিরুদ্ধে। ক্লাস শুরুর মাত্র ১৫ দিনের মাথায় ৩১ জানুয়ারি, ২০২২ আমার লেখাটা ছাপা হয় (লেখা সংযোজিত)। তারপর থেকে অবিরত ছাত্রলীগের হুমকি সহ্য করে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ দিকে চলে এসেছি। তাই আমি চাই না ক্যাম্পাসে আবার কোনো ভয়ের কালচার শুরু হোক। আমি চাই ক্যাম্পাসে সবাই মুক্ত বাতাসে তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করুক। যেখানে থাকবে পড়াশোনা, গবেষণা, গান, কবিতা, আড্ডা, খেলাধুলা, বিতর্ক পাশাপাশি সুস্থ রাজনৈতিক আলাপ।
সবশেষে তিনি আরও লেখেন, আমি আপনার সমর্থন চাই, আপনার সহযোগিতা চাই। এই আহ্বান শুধু বর্তমান নয়, সাবেকদের প্রতিও রইল। কারণ আমি বিশ্বাস করি আপনার অনুজ আপনারই অনুসারী। তাই আমাকে যেকোনো প্রয়োজনে যেকোনো সময় যে কেউ নক দিতে পারেন।