জুলাই মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪১৮, আহত ৮৫৬
- ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২১:২২
গত জুলাই মাসে সারা দেশে ৪৪৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৮ জন নিহত ও ৮৫৬ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ৭২ জন (১৭.২২%) ও শিশু ৫৩ জন (১২.৬৭%)। এ তথ্য জানিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। সংস্থাটি জাতীয় দৈনিক, অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রিনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তৈরি করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৩১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১০৯ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২৬.০৮ শতাংশ। এ ছাড়া ৯২ জন পথচারী এবং ৫৬ জন চালক ও সহকারী প্রাণ হারিয়েছেন। একই সময়ে ৪টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৬ জন এবং ২১টি রেল দুর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত ও ৭ জন আহত হয়েছেন।
জাতীয় মহাসড়কে ২০৩টি (৪৫.৮২%), আঞ্চলিক সড়কে ১৪৯টি (৩৩.৬৩%), গ্রামীণ সড়কে ৪৮টি (১০.৮৩%), শহরের সড়কে ৩৭টি (৮.৩৫%), অন্যান্য স্থানে ৬টি (১.৩৫%) দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সংঘটিত ২১৬টি (৪৮.৭৫%), মুখোমুখি সংঘর্ষ ৮১টি (১৮.২৮%), পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়া ৯৪টি (২১.২১%), পেছন থেকে আঘাত করা ৪৪টি (৯.৯৩%), অন্যান্য কারণে ৮টি (১.৮০%) দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে ১১৭টি দুর্ঘটনায় ১০৫ জন নিহত। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ২৯টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় ৪৭টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত হয়েছেন। জয়পুরহাটে সবচেয়ে কম— ৩টি দুর্ঘটনায় ১ জন নিহত। রাজধানী ঢাকায় ২৬টি দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত এবং ৩৮ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহতদের মধ্যে আছেন—২ জন পুলিশ, ৪ জন শিক্ষক, ২ জন সাংবাদিক, ৩ জন ব্যাংক-বীমা কর্মকর্তা ও কর্মচারী, ৪ জন এনজিও কর্মী, ১৩ জন স্থানীয় ব্যবসায়ী, ৯ জন বিক্রয় প্রতিনিধি, ৫ জন পোশাক শ্রমিক, ৩ জন নির্মাণ শ্রমিক, ১ জন রেলওয়ে কর্মচারী, ৪৭ জন শিক্ষার্থী।
ফাউন্ডেশনের মতে, দুর্ঘটনার মূল কারণগুলো হলো ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন ও সড়ক, অতিরিক্ত গতি, অদক্ষ চালক, ট্রাফিক আইন অমান্য, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি এবং বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি।
সংগঠনটি সুপারিশ করেছে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকদের বেতন ও কর্মঘন্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি, মহাসড়কে স্বল্পগতির যান বন্ধ ও সার্ভিস রোড নির্মাণ, পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ, গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি বন্ধ, রেল ও নৌপথ সংস্কার করে সড়ক চাপ কমানো ও সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, ‘অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে অতিরিক্ত গতির কারণে। প্রযুক্তির মাধ্যমে গতি নিয়ন্ত্রণ এবং চালকদের মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। পরিবহন শ্রমিকদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত ও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রক্ষাই দুর্ঘটনা হ্রাসের মূল চাবিকাঠি।’