ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রিজভীর 

রুহুল কবির রিজভী
রুহুল কবির রিজভী © সংগৃহীত

রুকন না হলে চাকরি থাকবে না বলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে শহীদ ও আহতদের স্মরণে আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ অভিযোগ করেন তিনি। 

তিনি বলেছেন, ‘আমি এমনও শুনেছি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যিনি ডিজি, তিনি তার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে বলেছেন, তোমরা রুকন না হলে তোমাদের চাকরি থাকবে না, এটা একদম সত্য কথা। আজকে আমাকে কয়েকজন এটা বলেছেন। আমি আপনাদের সামনে কোনো মিথ্যা কথা বানিয়ে বলছি না। এজন্য কি মুগ্ধ, আবু সাঈদ, ওয়াসিম শেখ হাসিনার পুলিশের গুলিতে জীবন দিয়েছে? নিজের শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে পুলিশের গুলিবর্ষণ করে নিয়েছে, এই গণতন্ত্রের জন্য?’

জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, আজকে আমরা যেখানেই যাই শুনি একটি সংগঠনের লোক তারা সেখানে বসে আছে। ডিসি কে? তারা বলছে এইটা একটি বিশেষ দলের লোক। ওরা ডিসি গিরি করছে না ঐখানে তারা তাদের সংগঠনের কাজ করছে। এখনো তো নির্বাচন হয়নি কে ক্ষমতায় যাবে জনগণ কাকে ভোট দিবে এটা তো এখনো নির্দিষ্ট হয়নি তাহলে এই কথাগুলো এখনই কেন আসছে? এগুলো কেন আমাদেরকে শুনতে হচ্ছে? অনেক সরকারি দপ্তর থেকে অনেকেই আসছে তারা বলছেন আমরা কি করব ভাই আমরা যদি ওই দলের সদস্য রুকন না হই আমরা তো চাকুরি করতে পারবো না। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার ভূত তার আত্মারা আবার নতুন করে নতুন কায়দায় নতুন চেতনায় তারাই আবার ভর করেছে। এটার জন্য তো এই ছেলেরা জীবন দেয়নি।

জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, নিজের শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে পুলিশের গুলি বরণ করে নিয়েছে এই গণতন্ত্রের জন্য? একটি রাজনৈতিক চেতনার রংয়ে আমাদের প্রশাসন থাকবে শেখ হাসিনা যে চেতনা তৈরি করেছিলেন সেই পাঁতানো চেতনার জন্যই কি এত রক্তপাত এত হানাহানি? শেখ হাসিনা যেমন তার অপশাসনের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই বলতো একে ধরো এদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দাও। আবার নতুন করে আমরা দেখছি অন্য চেতনা ধর্মের নামে। যে রুকন না হলে চাকুরি করতে পারবে না।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন,  আমাদের অনেকেই উপদেষ্টার পদ পেয়েছেন অনেকেই ভালো আছেন। তাহলে কি আবার নতুন করে নতুন আঙ্গিকে শেখ হাসিনার যে অপশাসন, দুঃশাসন এবং চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস টাকা লুট চাঁদাবাজি ভর্তি বাণিজ্য চাকুরি বাণিজ্যের সেটার কি আবার পুনরাবৃত্তি মানুষ দেখতে চায়? এই জন্য কি প্রায় দেড় হাজারের মতো শিশু-কিশোর তরুণ শ্রমিকরা রিক্সাওয়ালারা জীবন দিয়েছে? এই উপলব্ধি তো সবার হওয়া উচিত।

রিজভী আরও বলেন, ‘আমরা সেই গণতন্ত্র চেয়েছি, যে গণতন্ত্রে এ দেশের ভোটাররা ভোট দিয়ে যাকে ইচ্ছা তাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাবে। এজন্যই আমাদের লড়াই, এতো সংগ্রাম এবং এতো ত্যাগ। এজন্যই স্কুল, কলেজের ছেলেরা এত রক্ত দিয়েছে এবং নিজেদের জীবন দিয়েছে। এখানে এক চেতনাধারী বিদায় নিয়ে আরেক চেতনাধারী ক্ষমতার মধ্যে বসবে, এটা তো জনগণ প্রত্যাশা করে না। বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে সেই চেতনাধারীরা। তাদের লোক হতে হবে। তাদের লোক ছাড়া কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট হবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবে না, কোনো চাকরি হবে না।’