মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন, উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা
- ১১ আগস্ট ২০২৫, ১১:৩৪
বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তর থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নতুন নিয়ম চালুর কথা জানানো হয়। পরীক্ষা পদ্ধতির এই আকস্মিক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে উদ্বেগ ও অসন্তোষ।
নতুন পরীক্ষাব্যবস্থা অনুযায়ী, প্রতিটি কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করবেন দুইজন শিক্ষক। একজন শিক্ষক যিনি সংশ্লিষ্ট কোর্সের ক্লাস নিয়েছেন, তিনি প্রশ্ন দেবেন পাশাপাশি অন্যজন যিনি ক্লাস নেননি, তিনিও প্রশ্ন দেবেন। মডারেশন বোর্ড দুজন শিক্ষকের থেকে প্রশ্ন নিয়ে ৮ টি প্রশ্ন নির্বাচন করবেন। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ‘পার্ট এ’ এবং ‘পার্ট বি’ দুটি অংশ থেকেই থাকবে চারটি করে মোট আটটি প্রশ্ন, যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের উত্তর দিতে হবে তিনটি করে, অর্থাৎ মোট ছয়টি প্রশ্নের উত্তর।
এছাড়া মূল্যায়ন পদ্ধতিতেও আনা হয়েছে পরিবর্তন। দুই অংশের উত্তরপত্র আলাদাভাবে মূল্যায়ন করবেন সংশ্লিষ্ট দুই শিক্ষক। এ ক্ষেত্রে পূর্বের মতো আর কোনো তৃতীয় পরীক্ষকের মাধ্যমে পুনর্মূল্যায়নের সুযোগ থাকবে না, যা এতদিন পর্যন্ত উত্তরপত্র মূল্যায়নে নিরপেক্ষতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করত। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘দ্বৈত পরীক্ষণ’ পদ্ধতি চালু ছিল। ওই নিয়মে প্রতিটি উত্তরপত্র মূল্যায়ন করতেন দু’জন শিক্ষক। তাদের প্রদত্ত নম্বরের মধ্যে যদি উল্লেখযোগ্য পার্থক্য থাকত, তাহলে তৃতীয় একজন শিক্ষক পুনর্মূল্যায়নের দায়িত্ব নিতেন। এতে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নিরপেক্ষতা বজায় থাকত। নতুন নিয়মে এই সুযোগ না থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে অসন্তোষ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের মতে, একজন শিক্ষক ক্লাস না করেই যদি প্রশ্ন তৈরি ও মূল্যায়ন করেন, তাহলে বিষয়বস্তুর গভীরতা ও পাঠদানের ধারা অনুধাবনে ঘাটতি থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি পক্ষপাতিত্ব বা ভুল মূল্যায়নের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আতিক ইশরাক রিজভী বলেন, ‘পুরোনো পদ্ধতিতে ফলাফল দিতে সময় লাগলেও অন্তত একটা নিরপেক্ষতা ছিল। একজন তৃতীয় পরীক্ষকের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হতে পারতাম, কেউ অবিচার করলে সেটার সংশোধন হবে। নতুন নিয়মে সেই নিশ্চয়তা নেই। পরীক্ষামূলকভাবে এক বছর চালালেও এর মাঝেই অনেক শিক্ষার্থীর ফলাফল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুশীল বড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জানান, পুরাতন পদ্ধতিতে রেজাল্ট প্রকাশ বেশ সময় সাপেক্ষ। রেজাল্ট প্রকাশ করতে করতে নতুন পরীক্ষার সময় চলে আসে । এতে যারা অনুত্তীর্ণ হন, তারা ঝামেলায় পড়ে যায়। মূলত এজন্যই নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। নতুন পদ্ধতি মাত্র ১ বছরের জন্য অনুমোদন পেয়েছে। আশাব্যাঞ্জক কোন ফলাফল না পাওয়া গেলে আগের পদ্ধতিতে ফিরে যাওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।