জুলাই ঘোষণাপত্র ও নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানাল বিএনপি

বিএনপি লোগো
বিএনপি লোগো © সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আজকে প্রধান উপদেষ্টা দুটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন। একটি জুলাই ঘোষণাপত্র, আরেকটি জাতির উদ্দেশে ভাষণের মধ্য দিয়ে নির্বাচনের ঘোষণা। আমরা দুটোকেই স্বাগত জানাই।

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এসব কথা বলেন তিনি। 

সালাহউদ্দিন বলেন, এক বছর আগে এই দিনেই আমরা ফ্যাসিস্ট মুক্ত হয়েছিলাম। হাজারও ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছিল ফ্যাসিস্ট মুক্ত বাংলাদেশ। বিগত ১৬ বছর ধরে অবিরাম সংগ্রাম এবং যারা রক্তদান করেছেন, তাদের সবাইকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ২৪-এর জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, চিরতরে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, তাদের সবার প্রতি সমবেদনা এবং শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। আজকের এই দিনে এটা আমাদের বিশাল অর্জন। আমরা দীর্ঘ একবছর যাবত বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে ও রাষ্ট্রব্যবস্থার সংস্কারের জন্য সংস্কার কমিশনগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে যাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার, গণতান্ত্রিক সংস্কার, সংবিধানের গণতান্ত্রিক সংস্কার, তার একটা পর্যায়ে ঐকমত্যে উপনীত হয়েছি। আশা করি খুব শিগগিরই ঐকমত্যের ভিত্তিতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সেটা স্বাক্ষরিত হবে। আশা করি, সেটা বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়েও যদি আলাপ-আলোচনা হয় সেখানে আমরা অংশগ্রহণ করব। অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জাতির যে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যবদ্ধ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল আগে, সেটাকে সমুন্নত রাখব এবং এই ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যকে শক্তিতে পরিণত করে এই জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাব। একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র সমাজ এবং সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করব।

সালাউদ্দিন বলেন, আজকে প্রধান উপদেষ্টা দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়েছেন। একটি জুলাই ঘোষণাপত্র আরেকটি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণের মধ্য দিয়ে তিনি নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। আমরা দুটোকেই স্বাগত জানাই। জুলাই ঘোষণাপত্রের যে সমস্ত ঘোষণা; যেমন তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যথাযোগ্য জায়গায় সংবিধানে সেটা স্থাপন করা হবে। সেই প্রতিশ্রুতি আমরা আগেও দিয়েছিলাম এবং জুলাইয়ের যোদ্ধাদের জুলাই শহীদদের জাতীয় বীরের মর্যাদা দেব।

সালাহউদ্দিন উল্লেখ করেন, যারা আহত হয়েছেন, যারা বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদেরকে বিভিন্নভাবে আইনি সুরক্ষা সহযোগিতা এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি তিনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) যেমন দিয়েছেন, সারা জাতি দিয়েছে, আমরাও দিচ্ছি।

তিনি বলেন, আগামী দিনে নির্বাচনে মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ এবং এর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য প্রধান উপদেষ্টা যেসব পরামর্শ দিয়েছেন, সেটা অবশ্যই পরিধানযোগ্য। তিনি ঘোষণা দিয়েছেন— নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি পাঠাবেন। আগামী ২০২৬-এর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রমজান শুরু হওয়ার আগে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন। অবশ্যই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবেন যথাসময়ে। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার মধ্যদিয়ে সারা জাতি একটি নির্বাচনমুখি পরিবেশের মধ্যদিয়ে যাবে এবং সেই নির্বাচনের আবহ সৃষ্টি হবে। আগামী দিনের নির্বাচন সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও অবাধ এবং বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে প্রশংসিত একটি নির্বাচন হবে বলে আশা করি। সেই লক্ষ্যে সমগ্র জাতিকে এবং সমস্ত জনগণকে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য আমরা আমাদের পক্ষ থেকেও আহবান জানাচ্ছি।