খুবিতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কলা ও মানবিকবিদ্যার ভূমিকা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু
- ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮:০৬
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিক স্কুলের আয়োজনে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠায় কলা ও মানবিকবিদ্যা’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। শনিবার (২ আগস্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম।
উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে সংঘাত ও বিভাজনের প্রেক্ষাপটে শান্তি শুধু আইন বা রাজনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে অর্জিত হয় না। এটি গড়ে ওঠে মানুষের আবেগ, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও মানবিক চেতনার ভিতরে। এই জায়গায় কলা ও মানবিকবিদ্যার গুরুত্ব অপরিসীম।’
তিনি আরও বলেন, ‘জুলাই গণ-আন্দোলনে তরুণদের প্রতিবাদ ভাষা পেয়েছিল গান, গ্রাফিতি, ভিডিও ও লেখনীর মাধ্যমে। এগুলো ছিল শুধুই প্রতিবাদ নয়, বরং শিল্পের মাধ্যমে শান্তির আহ্বান ও ঐক্যের প্রতিচ্ছবি। শিক্ষা শুধু প্রযুক্তিগত দক্ষতায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি হওয়া উচিত সহানুভূতি, সহনশীলতা, সমালোচনা শক্তি ও বৈশ্বিক চেতনার শিক্ষা; যা বিকশিত হয় সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন ও শিল্পচর্চার মধ্য দিয়ে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান বলেন, ‘সাহিত্য ও ইতিহাস মানুষের মাঝে সহমর্মিতা, সাংস্কৃতিক সচেতনতা ও সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলে। এই সম্মেলন গবেষকদের মধ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের পাশাপাশি নতুন গবেষণার পথও তৈরি করবে।’
তিনি গবেষণার চ্যালেঞ্জ, অর্থায়নের সীমাবদ্ধতা ও ৪র্থ শিল্পবিপ্লবের বাস্তবতায় ভারসাম্যপূর্ণ উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও তুলে ধরেন।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. শাহজাহান কবীর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইংরেজি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. আব্দুর রহমান শাহীন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মো. দুলাল হোসেন এবং ইংরেজি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক হামালনা নিজাম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কলা ও মানবিক স্কুলের পরিচিতিমূলক তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হয় এবং অতিথিদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন আয়োজকরা।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে ইউনিভার্সিটি সায়েন্স মালয়েশিয়ার আর্টস অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ কামারুল কাবিলান বিন আব্দুল্লাহ ‘সহযোগিতামূলক, সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী শিক্ষাপদ্ধতির মাধ্যমে শান্তি শিক্ষা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
পরবর্তীতে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আজম ‘শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবোন্নয়নে কলা ও মানবিকবিদ্যার ভূমিকা’ নিয়ে তার প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি আরও বলেন, কলা ও মানবিক অনুষদের বিদ্যা আমদানি যোগ্য নয়। এই বিদ্যাকে গুরুত্ব না দেওয়া মানে মানুষকে যন্ত্রে পরিণত করা।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে (৩ আগস্ট) কি-নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমান খান।
দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ১৬৫টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে। এতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ দেশি-বিদেশি তিন শতাধিক গবেষক অংশগ্রহণ করছেন।