সংরক্ষিত বনে বনবিভাগের নিষিদ্ধ গাছের চারা রোপণ

রোপণ করা নিষিদ্ধ ঘোষিত আকাশমনি গাছের চারা
রোপণ করা নিষিদ্ধ ঘোষিত আকাশমনি গাছের চারা © টিডিসি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার সন্তোষপুর সংরক্ষিত বনে রোপণ করা হচ্ছে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত আকাশমনি গাছের চারা। সুফলা বনায়নের আওতায় ৫০ একর জমিতে অন্যান্য গাছের পাশাপাশি এই ক্ষতিকর প্রজাতির গাছ রোপণ করেছে বনবিভাগ নিজেই। স্থানীয় উপকারভোগীদের অভিযোগ, বনের উপকার ভোগীরা জানান, বনবিভাগ বনায়ন করবে এবার উল্টো বনবিভাগ আমাদেরকে দিয়ে অন্যান্য গাছের চারা সাথে নিষিদ্ধ আকাশমনি গাছের চারা রোপণে বাধ্য করছেন। বনের বিভাগের কথা না শুনলে বনবিভাগ আমাদেরকে বনের জমি থেকে উচ্ছেদের ভয় দেখায়। 

সরেজমিন সন্তোষপুর বিভাগের নার্সারিতে গিয়ে দেখা গেছে, ৫০ থেকে ৬০ হাজার নিষিদ্ধ আকাশমনির চারা রয়েছে নার্সারিতে। নিমসহ অন্যান্য গাছের রোপণের যোগ্য হয়নি এখনো। নার্সারি থেকে নিষিদ্ধ আকাশমনির উঠিয়ে বনে রোপণ করার ফলে নার্সারির আকাশমনির অনেক সারি ফাঁকা রয়েছে। পাশে এক উপকার ভোগীকে অটো গাড়িতে চারা তুলে দিচ্ছেন বন বিভাগ। তার সাথে কথা বলে জানা গেছে তাকে দেয়া বনবিভাগের প্লটে চারা রোপণ পাতলা হয়েছে বলে বনবিভাগ তাকে দুই শতাধিক চারা দিচ্ছে ঘন করে গাছ লাগানোর জন্য। বনের জমিতে গাছ রোপণে বন বিভাগের  অবহেলায়  বিষয় নিয়ে কথা বললে তারা কোন সদোত্তর দিতে পারেন নাই। 

নাওগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মরহুম মোজাম্মেল হোসেন মোজার বনের জমি রাঙামাটিয়ার জামকুড়ি নামক স্থানে গিয়ে দেখা গেছে শত শত নিষিদ্ধ আকাশমনি গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। জয়না মার্কেট নামক স্থানে অপর এক উপকারভোগীর প্লটে একই কায়দায় নিষিদ্ধ আকাশ মনির চারা রোপণ করা হয়েছে। 

বনবিভাগ বনের জমিতে আকাশমনির চারা রোপণের বিষয়টি স্বীকার করেনি। তবে নার্সারিতে নিষিদ্ধ আকাশমনির ৫০ থেকে ৬০ হাজার নিষিদ্ধ আকাশ মনির চারা রয়েছে বলে জানিয়েছে। 

সন্তোষপুর সংরক্ষিত বনের বনবিট কর্মকর্তা এমদাদুল হক জানান,  সরকারিভাবে নিষিদ্ধ ইউকিপ্টাস ও  আকাশমনির গাছের চারা রোপণে বনবিভাগ থেকে তাদেরকে কোন চিঠি দেয়া হয়নি। এবার বনবিভাগ ৫০ একর জমিতে ৫০ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপন করা হয়েছে। সরকারিভাবে নিষিদ্ধ আকাশমনি গাছের চারা রোপণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চারা গুলো এমনিতেই হয়েছে। আমরা খুঁটি দিয়ে দিয়েছি। 

সরকারিভাবে নিষিদ্ধ গাছের চারা তালিকা সংগ্রহ ও ক্ষতিপূরণ দিয়ে ধ্বংসের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর মোহামদ জানান, এ অর্থ বছরে ৩০ হাজার ৬শ ১২টি নিষিদ্ধ গাছের চারা ভর্তুকি দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এ উপজেলায় ২১  টি অনুমোদিত নার্সারিতে নিষিদ্ধ গাছের চারা রয়েছে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬শ ২৫  টি। অর্থ বরাদ্দ সাপেক্ষে বাকী চারা ধ্বংস করা হবে। নার্সারি সরকারি হোক আর বেসরকারি হোন কেউই নার্সারি থেকে চারা উত্তোলন করে অন্যত্র রোপণ করতে পারবেন না। 

উপজেলা বনকমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, নিষিদ্ধ ঘোষিত গাছের লাগানোর কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।