জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মানসিক ক্ষত কাটিয়ে উঠতে তরুণীদের পাশে আইলিন আবদুল্লাহ
- ২৯ জুলাই ২০২৫, ২১:১৪
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পরও অনেক তরুণীর মনে রয়ে গেছে সেসব ভয়াবহ দিনের মানসিক ক্ষত। রাজপথে সাহসিকতার সঙ্গে দাঁড়ানো এই নারীরা এখনো অনেকেই ভুগছেন উদ্বেগ, নিদ্রাহীনতা ও দুঃস্বপ্নের মতো মানসিক জটিলতায়। তাদের সেই মানসিক যন্ত্রণা লাঘবের লক্ষ্যে আয়োজিত হয়েছে কাউন্সেলিং সেশন—“লিসেনিং টু হার – জুলাই”।
রবিবার (২৭ জুলাই) নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে জুলাই রেভ্যুলুশনারি অ্যালায়েন্স (জেআরএ) এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি এথিকস অ্যান্ড ডাইভারসিটি ক্লাব (এনএনইউইডিসি) এর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সেশন। এটি পরিচালনা করেন আন্তর্জাতিক ট্রমা থেরাপিস্ট আইলিন আবদুল্লাহ। সেশনে তারা মুক্তভাবে নিজের অভিজ্ঞতা, ভয় ও মনের গভীর ক্ষতের কথা শেয়ার করেছেন।
সেশনে অংশ নেওয়া একাধিক তরুণী জানান, জুলাই ২০২৪-এ রাজপথে অবস্থানকালে তারা প্রত্যক্ষ করেছেন বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহিংসতা এবং রাজনৈতিক দমনপীড়নের নির্মমতা। কেউ কেউ গণগ্রেফতার, নির্যাতন এবং আত্মগোপনের অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেন। তাদের ভাষ্যমতে, আন্দোলনের পরে এসব স্মৃতি বারবার ফিরে আসায় মানসিক ট্রমার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন।
আইলিন আবদুল্লাহ অংশগ্রহণকারীদের সাথে কথা বলেন কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি মানসিক চাপ বা ট্রমা ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠা যায়। তিনি ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করেন, কীভাবে মানসিক যন্ত্রণা দূর করা যায়। অংশগ্রহণকারীদের জন্য পরিচালিত হয় গাইডেড কনভারসেশন, যেখানে তরুণীরা তাদের বিভিন্ন মানসিক কষ্টের কথা শেয়ার করেন।
কাউন্সেলিং সেশনে জুলাই বিপ্লবের নারী অংশগ্রহণকারীদের পাশাপাশি শহিদ পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। কেউ কেউ তাদের হারানো সন্তান, ভাই বা স্বামীর স্মৃতি শেয়ার করেছেন।
উল্লেখ্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। তারা কেবল রাজপথে ছিলেন না—তারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রতিবাদে কণ্ঠ তুলেছেন এবং দেশের ইতিহাসে এক সাহসী অধ্যায় রচনা করেছেন। আন্দোলনের দিনগুলোতে তাদের প্রতিবাদ বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চেতনার শক্ত ভিত নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।