কর্মী বাড়াতে ঢাকাকে দুভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের, পশ্চিমের দায়িত্বে রেজাউল-শান্ত

রেজাউল করিম ও শান্ত তালুকদার
রেজাউল করিম ও শান্ত তালুকদার © সংগৃহীত

দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করতে সাংগঠনিক রূপান্তরে গেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। জনবল ও কার্যক্রম বিস্তৃত হওয়ায় কেন্দ্রীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখাকে ভেঙে ‘পূর্ব’ ও ‘পশ্চিম’ নামে দুটি নতুন শাখা গঠন করেছে সংগঠনটি। রাজধানীর আশুলিয়া, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও ফার্মগেট এলাকার ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয় এখন ‘পশ্চিম শাখা’র আওতায় এসেছে। সংগঠনটি বলছে, এর মাধ্যমে তারা ‘নৈতিক উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধে’ কাজের ক্ষেত্র আরও সুসংগঠিত করতে চায়।

২৫ জুলাই (শুক্রবার) বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিম শাখার অফিসিয়াল পেজ থেকে সভাপতি হিসেবে রেজাউল করিম ও সেক্রেটারি হিসেবে শান্ত তালুকদারের নাম ঘোষণা করা হয় ২০২৫ সালের বাকি ছয় মাসের জন্য।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ২০২৫ সালের শুরুতে প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসে ইসলামী ছাত্রশিবির, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় কমিটি নামে একটি শাখা। সেই শাখার অধীন ছিল দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির। তবে জনশক্তি বৃদ্ধির ফলে মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দুটি শাখায় ভাগ করা হয়েছে। আশুলিয়া, মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও ফার্মগেট এলাকার ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়কে ছাত্রশিবির, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পশ্চিম শাখায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিশেষ করে আশুলিয়ার অন্তর্গত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ড্যাফোডিল, মানারাত ও সিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের জনশক্তি উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করবে না যুক্তরাজ্যের বিখ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়

পশ্চিম শাখার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন রেজাউল করিম। তিনি এর আগে কেন্দ্রীয় শাখার সেক্রেটারি ছিলেন। রেজাউল করিম মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগে বিএসসি শেষ করে বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। সেক্রেটারি হিসেবে মনোনীত শান্ত তালুকদার মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে এখন স্নাতক ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন। তিনি ফলাফল পাওয়ার পর ড্যাফোডিলে মাস্টার্সে ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে ।

কেন্দ্রীয় কমিটিকে ‘পূর্ব’ ও ‘পশ্চিম’ শাখায় বিভাজনের কারণ জানতে চাইলে রেজাউল করিম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘ছাত্রশিবির প্রতি বছর নিয়মতান্ত্রিকভাবে ও নিজস্ব গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কমিটি গঠনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। আপনারা জানেন, পুরো ঢাকা শহরেই মাকড়সার জালের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছড়িয়ে আছে। এতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩-৫ লাখ। ছাত্রশিবির কোনো নির্দিষ্ট শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দিকে ঝুঁকে থাকে না। আমাদের জায়গা প্রত্যেক ছাত্রের জন্যই উন্মুক্ত। আমরা চাই যে প্রত্যেক শিক্ষার্থী যেন ধর্মীয় অনুভূতি লালন করতে পারে এবং পাশ্চাত্যের চাপিয়ে দেওয়া সাংস্কৃতিক, পারিবারিক ও সামাজিক আগ্রাসন থেকে নিজেকে রক্ষা করতে শেখে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই আমরা বেসরকারি শাখাকে দুই ভাগে ভাগ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছি। আমাদের মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের নৈতিক মানোন্নয়ন, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা জাগানো এবং কেন আমরা এই জমিনে এসেছি, সেই উপলব্ধি সৃষ্টি করা। কাজের ফোকাস বাড়ানোর জন্যই আমরা শাখা ভাগ করেছি,অন্য কোনো কারণে নয়।’

আরও পড়ুন: সমঝোতায় পদ ভাগাভাগি হলো না, রুয়ার সভাপতি-সম্পাদক হলেন জামায়াতের রফিক খান-রাবির নিজাম উদ্দিন

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ছাত্রশিবিরকে নিয়ামত হিসেবে দেখি। শিবির হচ্ছে দায়িত্বের বেলায় পানির মতো, যে পাত্রে ঢালুন, সেই পাত্রের আকৃতি ধারণ করে। আমাদের যখন যেখানেই দায়িত্ব দেওয়া হয়, আমরা তা দৃঢ়চিত্তে পালন করি।’

জনবল সম্পর্কে জানতে চাইলে রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থী আমাদের আপনজন। কাউকে আমরা বাইরের মনে করি না। ছাত্রশিবির প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিজের মতো করে গ্রহণ করে। আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরাও ছাত্রশিবিরকে তাদের মনের ভরসার জায়গা হিসেবে গ্রহণ করেছে।’