‘তুমি কালো, আবার বিয়ে করব’ বলায় আত্মহত্যা স্ত্রীর, ৩০ বছর পর মুক্তি পেলেন স্বামী
- ২৮ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৩
গায়ের রং নিয়ে স্ত্রীকে খোঁটা দিতেন স্বামী। দ্বিতীয়বার বিয়ে করার হুমকিও দিতেন। এতে শ্বশুরবাড়িতে হেনস্থা ও অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হন তিনি। নারীর মৃত্যুর ৩০ বছর পর এ সংক্রান্ত মামলা থেকে স্বামীকে মুক্তি দিয়েছেন আদালত। ভারতের মুম্বাই হাইকোর্ট জানাল, এটা আত্মহত্যায় প্ররোচনা নয়। স্বামী যা করেছেন, তা ঘরোয়া কলহ। ফৌজদারি হেনস্থা সংক্রান্ত অপরাধ নয়। তাই তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
আনন্দবাজারের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৯৫ সালের জানুয়ারি মাসে কুয়োয় ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন গৃহবধূ। মৃত্যুর আগে নিজের বাবা-মাকে জানিয়ে গিয়েছিলেন, শ্বশুরবাড়ির হেনস্থার কথা। শুধু স্বামী নন, পরিবারের অন্যেরাও বধূকে হেনস্থা করতেন বলে অভিযোগ। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, তাকে গায়ের রং নিয়ে খোঁটা দিতেন। বার বার বলতেন, স্ত্রীকে তার পছন্দ নয়। দ্বিতীয়বার বিয়ে করবেন। পুত্রবধূর রান্নার সমালোচনা করতেন শ্বশুর। বলতেন, রান্না খাওয়া যায় না।
মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার বাসিন্দা মুক্তি পাওয়া যুবক। ১৯৯৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। সে সময়ে বয়স ছিল ২৩। সাতারার আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং স্ত্রীর ওপর অত্যাচার এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার অপরাধে তাঁকে ৫ বছরের কারাবাসের নির্দেশ দেওয়া হয়।
সম্প্রতি মুম্বাই হাইকোর্টে মামলার শুনানি হয়েছে। বিচারপতি এসএম মোদকের পর্যবেক্ষণ, শ্বশুরবাড়িতে বধূর সঙ্গে যা যা হয়েছিল, তা ঘরোয়া কলহ। অপরাধ নয়। স্ত্রীকে গায়ের রং নিয়ে খোঁটা দেওয়া, বিয়ের হুমকি ফৌজদারি হেনস্থার আওতায় পড়ে না। ফৌজদারি আইনে শাস্তিও দেওয়া যায় না।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে নিহত ৮৯, আহত ৪৬৭
বিচারপতি বলেছেন, ‘বৈবাহিক জীবনে প্রতিটি বিরোধ ফৌজদারি অপরাধ নয়। তখনই তা অপরাধের পর্যায়ে পড়বে, যখন হেনস্থার কারণে বধূর সামনে মৃত্যু ছাড়া কোনও বিকল্প থাকবে না। এ ক্ষেত্রেও বধূর ওপর নির্যাতন হয়েছে। কিন্তু এটা সে ধরনের নির্যাতন নয়, যে কারণে অপরাধ আইন প্রয়োগ হতে পারে।’
আদালতের পর্যবেক্ষণ, নিম্ন আদালতে আইনের মৌলিক নীতি অগ্রাহ্য করা হয়েছে। নারীর আত্মহত্যার সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির হেনস্থার সরাসরি যোগ প্রমাণিত হয়নি। ফলে রায় খারিজ করে অভিযুক্তকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।